শরতের আগমনী …… সোনাঝরা রোদ নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা এসেছে শরৎ  (ষষ্ঠ পর্ব)

প্রিয়জনের সঙ্গে শেয়ার করুন :--👍

 504 total views

শরতের আগমনী …… সোনাঝরা রোদ
নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা
এসেছে শরৎ  (ষষ্ঠ পর্ব)

কবি তো লিখে গেছেন?—‘‘শিউলি ডালে কুঁড়ি ভরে এল/টগর ফুটিল মেলা/মালতীলতায় খোঁজ নিয়ে যায়/মৌমাছি দুই বেলা।’’ শিউলি ফুলের আরেক নাম শেফালি। দিনের আলোর স্পর্শে এই কমলা-সাদা ফুলটি তার নিজস্বতা হারায়। সূর্য ওঠার আগেই গাছ থেকে খসে পড়ে মাটিতে। টুপটাপ, গালিচার মতো বিছিয়ে থাকে শিশির-ভেজা কমলা-সাদা বৈভব। শিউলি ফুলের পিছনে লুকিয়ে রয়েছে কিছু পৌরাণিক কাহিনি।

নাগরাজের অপরূপা লাবণ্যময়ী কন্যা পারিজাতিকা সূর্যের প্রেমে পড়েন। কিন্তু দিনমণির-র কাছে সে পবিত্র প্রেম নজরে পরে না। শেষে দিনমণি সূর্যকে না পেয়ে পারিজাতিকা আত্মহনন করেন। তার দেহের ভস্ম পারিজাত ফুল রূপে স্বর্গে ফুটে ওঠে। সূর্যের স্পর্শমাত্রাই সে নীরব ব্যর্থ প্রেমিকার মতো ধরে পড়ে মাটিতে। এই পারিজাত হল স্বর্গের শ্রেষ্ঠ কুসুম। পারিজাত শিউলিরই নামান্তর। পুষ্পপুরাণে রয়েছে অন্য গল্প। পারিজাত স্বর্গের ফুল।

শরৎ-হেমন্তের সকালে শিউলির সৌরভ বাঙালির প্রাণে আনে উৎসবের মেজাজ। শ্রীকৃষ্ণের দুই পত্নী সত্যভামা ও রুক্মিনীর মনে খুব দ্বন্দ্ব যে কৃষ্ণ কাকে বেশি ভালোবাসেন। সত্যভামা না রুক্মিনী কাকে। কৃষ্ণ উদাসীন থাকেন এ প্রশ্নে। শেষে একদিন তাঁরা আবদার করলে পারিজাত ফুল যদি কৃষ্ণ এনে দিতে পারেন স্বর্গ থেকে, তাহলেই বোঝা যাবে কৃষ্ণের পত্নীপ্রেমের গাঢ়তা। কৃষ্ণ স্বর্গ থেকে চুপিচুপি পারিজাত বৃক্ষ চুরি করে আনেন। সত্যভামা সকালে ঘুম ভেঙে দেখেন তার প্রাসাদে একটি অপূর্ব পারিজাত বৃক্ষ এহং সেই ফুলের গুচ্ছ বিছিয়ে রয়েছে রুক্মিনীর প্রাসাদকোণে। এ দিকে স্বর্গের ফুল পারিজাত চুরির অপরাধে দেবরাজ ইন্দ্র আভিশাপ দেন, পারিজাত কেবল ফুল ফুটেই ঝরে যাবে। ফল হবে না কখনও সে ফুলের। তা না হোক, আমরা তো শিউলি-শেফালিকা-পারিজাত যে মানেই ডাকা হোক, তার ফুলটাই ভালোবাসি। শরৎ ঋতুর শ্রেষ্ঠ সে ফুল।

বাংলা কবিতার আসরের সকল শ্রদ্ধেয় কবিগণকে জানাই শারদ-শুভেচ্ছা। বাংলা কবিতা-আসরের জয় হোক, বাংলা কবিতার জয় হোক, কবিদের জয় হোক। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু!

 

 

নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা
এসেছে শরৎ  (ষষ্ঠ পর্ব)

সুনীল আকাশে সাদা মেঘ ভাসে
শরতের আগমনে,
তরুর শাখায় পিকদল গায়
ফুল ফুটে বনে বনে।

ফুটেছে কমল আসে অলিদল
দলে দলে সরোবরে,
মরালেরা ধায় মরালীরা চায়
জলে জলকেলি করে।

পথে তরুশাখে বিহগেরা ডাকে
সোনাঝরা রোদ ঝরে,
শরত্ এলোরে আজি ধরা পরে
পরাণ পাগল করে।

মাধবী মালতী টগর ও যুথী
ফুটে আছে থরে থরে,
রাশি রাশি কত শিউলিরা শত
পড়ে ঝরে অনাদরে,

কচি দূর্বাঘাসে পথের দুপাশে
শিশিরের বিন্দু শোভে,
ফুটে ফুল কলি দলে দলে অলি
ছুটে আসে মধু লোভে।

0

Publication author

0
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। বর্তমানে কবি কবিতা মুক্তমঞ্চ, প্রজন্ম ফোরাম, কবি ও কবিতা, আর কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। সামহোয়্যার ব্লগ, কবির কয়েকটি নিজস্ব ব্লগ, লক্ষ্মণ ভাণ্ডারীর কবিতা, আমার কবিতা, Get Bengali Status, কবিতার ছেঁড়াপাতা, ব্লগ চালু আছে। কাব্য ও কবিতা ওয়েবসাইটের সাথে যুক্ত।
Comments: 4Publics: 98Registration: 21-07-2020
প্রিয়জনের সঙ্গে শেয়ার করুন :--👍
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

পরিচিতি বাড়াতে একে অপরের লেখায় মন্তব্য করুন। আলাপের মাধ্যমে কবিরা সরাসরি নিজেদের মধ্যে কথা বলুন। (সহজেই কবিকল্পলতা প্রকাশনী ব্যাবহারের জন্য আমাদের এপ্লিকেশনটি ইন্সটল করে নিন)