অবশেষ
আজ হঠাৎ কেন জানি তোমার কথা পড়ল মনে,
সেই কবে কোন এক পূর্ণিমা তোমার কথা মনে করিয়ে দিয়েছিল,
সে বহুদিন হবে,
আজকাল আর তেমন ছাঁদে যাওয়া হয় না,
মেঘের রাজ্যে চাঁদের লুকোচুরি দেখে রাতের একেকটা প্রহর কাটিয়ে দেয়া হয় না,
জোনাকিদের পাখায় ভর করে তোমায় নিয়ে স্বপ্নের জাল বুনা হয় না আর,
বরং ওসবকে আজকাল বড় অসহ্য ঠেকে,
ঘৃণা করি পূর্ণিমা, সত্যি বলছি বড্ড বেশি ঘৃণা করি,
লুকিয়ে রাখি নিজেকে, ভীষণ বিভৎস লাগে চাঁদটাকে।
তবুও আজ কেনো জানি চলে এলাম ছাঁদে, রাত প্রায় তিনটে হবে,
কৃষ্ণপক্ষের মধ্য ভাগের ঘোলাটে চাঁদটা কেমন তাকিয়ে আছে,
তাকিয়ে আছি আমি, যেন ঘোলাটে সব স্মৃতিরা ভেসে যাচ্ছে,
স্পষ্টতর হচ্ছে পুরোনো স্মৃতির মোড়কে ঢাকা সেই চাঁদখানা,
কত নির্ঘুম রাত্রির সাক্ষী, আজও কেমন একই আছে,
আমরাই কেবল বদলে যাই, বদলে যায় সম্পর্ক গুলো,
তবুও সবকিছুই কি আদৌ বদলে ফেলা যায়?
হৃদয়ের কোথাও ঠিকই আনাগোনা থেকে যায়,
নিতান্ত উচ্ছিষ্ট হলেও কেমন যেন ফেলে দেয়া যায় না,
নিয়ত তাড়া করে, আমরা বড়জোর পালিয়ে বেড়াই।
আজ আমার জন্মদিন, জানো না নিশ্চয়,
তুমি আসলে কিছুই জানো না, কেন জানো না?
একটি কিশোরী স্বপ্ন দেখতো কেউ একজন কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলবে,
হ্যাপি বার্থডে ডে টু ইউ,হ্যাপি বার্থডে ডে টু ইউ…..
কিন্তু সেই কেউ কখনো বলে না,বলে নি।
কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে গরিয়েছে সেই প্রতিক্ষায় কেউ সাড়া দেয় নি,
কিশোরী প্রতিটি মুহূর্তে সেই সত্তাকে খুঁজেছে বড় আকুতি সহকারে,
কিন্তু তুমি একটি বারের জন্যও সাড়া দাও নি,
পেছন ফিরে তাকাও নি একটি বারও।
সেই শেষবারের কথা মনে পড়ে?
পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়া সেই সূর্য সাক্ষী,
আমি চিৎকার করে ঢেকেছি তোমায়,
তুমি সাড়া দাও নি
পাষন্ড তুমি,নির্দয়, স্বেচ্ছাচারী।
আজকাল আর তোমার কথা তেমন পড়ে না মনে,
নিজেকে কেমন একরকম মানিয়ে নিয়েছি, বুঝিয়ে নিয়েছি,
সামনে এগিয়ে চলে যা কিছু, তাদের সাথেই কেমন যেন জড়িয়ে নিয়েছি,
গোড়ার দিকে মুশকিল হত বেশ, তবে এখন সয়ে গেছে,
রয়ে গেছে কোথাও হয়ত কোনো অবশেষ।