আজব ঘরের আমি
আমি কে, আর আছি কোন জগতে; আমাকে আজ বড্ড ভাবায়
আমি কি আসলে কোন পৃথিবীতে আছি, যা দেখা যায়!
চেনা জানা পৃথিবী, যার মাথার উপরে গভীর আকাশ
আর পায়ের নীচে জীবন্ত মাটি, আছে আরও জীবন্ত ঘাস
যেখানে বাতাস দিয়ে যায় প্রাণের পরশ অফুরান
নাকে লেগে থাকে শুধুই প্রকৃতির ঘ্রাণ
দুই কানে বাজে বহুবিধ লয় আর তালে পৃথিবীর যত গীতি
যেখানে আলো দিয়ে যায় এক মুঠো ছায়ার প্রীতি
যেখানে আমি দেখি সকলেরে, সকলে আমায় দেখে
সকলের সুখ-দুঃখগুলো সকলে ভাগাভাগি করে রাখে
কিন্তু এ কোন পৃথিবী! এখানে মাথার উপরে আকাশ নাই
মাটির জীবন দেখি না, কত দিন তার পরশ না পাই!
এখানে ছয়দিকে প্রকৃষ্ট শত্রুতার গভীর দেয়াল
শুধু, মাঝখানে ছোট্ট এক খন্ড আবছায়া আঁধারের খেয়াল
তাই কখনো নিজের ছায়া দেখি না, শুধু নিজেকে দেখি;
এক পাশ শরীর দেখি, মুখ দেখিনি কতকাল! কল্পনায় মুখ আঁকি
তাকে কি আর চিনতে পারবো কোন দিন যদি দেখা হয়
নাকের তীব্র পুঁতিগন্ধ অতঃপর বিদ্যুৎ গতিতে মগজময়
ছড়িয়ে যায়।কানে যেন এসে ভর করে আছে মৃত্যুর যত নিস্তব্ধতা
আমি শব্দের আকার যেন বেমালুম ভুলে গেছি, আর কি মনে পড়বে তা?
আবার মাঝে মাঝে যখন নরকের ঝলক পাই, আরেক দফা কেয়ামত গুনি
তখন নিজের নিঃশব্দ শব্দগুলি শুধু নিজের বুকের মধ্যে শুনি
জানি না -ভগবানের কাছেও এত ঝলকের ভ্যারাইটি আছে কিনা!
এখানে কখনও আমি প্রাণদাত্রী বাতাসের পরশ বুঝি না
হাত বাড়িয়ে তাই আর প্রাণ খুঁজি না বুঝে আর নাবুঝে;
কেবলই প্রাণহীন প্রাণ নিয়ে থাকি মুখগুঁজে
অবাক বিস্ময়ে আমি আবার ভাবি-আমি আসলে কে!
আমি কি প্রাণময় প্রাণী! আমি কি আছি পৃথিবীতে!
তাই বিধাতার কাছে বড্ড অনুযোগ ভরে জানতে চাই অসহায়
আমি-তোমার মখলুকাতের সুদীর্ঘ তালিকায় আছি কি কোন দফায়?
বলে দাও হে, পরোয়ারদেগার! এবার বলে দাও আমায়
আমি জানি-আমি নাই, আমি একেবারেই সেখানে বেনামী
কেন না, আমার এই ‘আমি’ যে আজ এক ‘আজব ঘরের আমি’।
(০১০১২৪, ঢাকা)
……………………………………………………………………………………
আজবঘর > ? (শব্দটা ইচ্ছা করেই avoid করেছি)