কবি
আমি কবি, আমি উদ্ভাবনী শক্তিধর!
আমি মহা-মানস দুরন্ত কল্পনাকারী!
কল্পনা দিয়ে অবলীলায়-রচিতে পারি স্বর্গ-মর্ত্য- পাতাল।
আমি ত্রিলোক সঞ্চারী!
রাগ- রাগিনী আনতে আরোহণ করি স্বর্গে,
ভূগর্ভে অবতরণ করে আনি নৃত্যের বিস্ময় ধ্বনি।
আমি আবির্ভূত হই অনিত্য পৃথিবীতে সুর-ছন্দ- নৃত্যে,
আমি তৌর্যত্রিক!
আমি কালদ্রষ্টা!সেকাল-একাল ত্রিকাল দর্শী –
অতীতের দৃষ্ট সাক্ষী, হালের সমাজ রাষ্ট্রের দর্পণ,
আমি ভবিষ্য কালের ভবিষ্ণু পথপ্রদর্শক,
আমি মহাজ্যোতিষী!
আমি দারুণ চিত্রকর!
চিত্রণ করি অদৃশ্য চিত্তের গোপন ছবি
বর্ণ-বিবর্ণ জীবনের রংতুলি দিয়ে,
কখনো চিত্তাকর্ষক তৃপ্ত সুখের;কখনোবা দুঃখের বিমূর্ত ছবি।
আমি দার্শনিক,দর্শন করি ঐ নৈসর্গিক মহাসৃষ্টি;
সৃষ্টির সকল রহস্য-তত্ত্বের তত্তদর্শী –
আমি অমীমাংসিত অধ্যায়ের সমাধান,
আমি সৃষ্টির রহস্য বিদিত,অগ্রজ্ঞাত দিব্যজ্ঞান –
অনন্তর জ্ঞাত বিজ্ঞান!
আমি অতি রসজ্ঞ!
আমার কিশলয়-কচি মন দুলে অবুঝ শিশুর দোলনায় –
খেলে সব শিশুর অন্তরে!
ছুটে দিগন্তে নত আকাশের সীমানায় দুরন্ত কিশোরের মতো।
আমি চির সবুজ, আমার অনন্ত যৌবন!
তরুণের বুকে জ্বালি প্রেমের তেজস্কর বহ্নি-শিখা।
আমার উচ্চারিত প্রতিটি সুলেল স্নিগ্ধ শব্দে
প্রতি কিশোরীর মনে কেটে যাই প্রেমে দাগ-চিহ্ন,
আমি শ্রেষ্ঠ প্রেমিক!
আমি শিশুর রম্যরসিক, তারুণ্যের তেজীরস, প্রেমিকার প্রেম-রস সুধা!
আমি কবি! আমি যুগে যুগে অবতীর্ণ হই –
সকল দেশে-সকল জাতে-সকল ভাষায়,
অজ্ঞান-অন্ধকারে মানুষের ঘরে-ঘরে ;
অপ্রকাশিত সুন্দর আর অব্যক্ত সত্য প্রকাশের জন্যে।
আমি বাক স্বাধীন!
আমি ঈশ্বর কর্তৃক সনদপ্রাপ্ত সত্য-পাঠক!
আমি আসি নব্য প্রবাহে,নতুন যুগের যুগবাণী পৌছাতে!
আমি যুগন্ধর, নবযুস্রষ্টা, আমার বক্তব্য স্পষ্ট!
আমি সকল যুগ, সকল শতাব্দী উত্তীর্ণ –
আমি একবিংশ শতাব্দীর যুগান্তকারী কবি,
আমার এক হাতে মানবতার পুষ্পডালা আর
হাতে ন্যায়ের সত্য-দীপ্ত -বিবস্বান;
আমি এসেছি মিথ্যাগ্রাসী আঁধারে মধ্যে জ্বালতে সত্যের আলো,বিলাতে মানবতার ফুল!
এই আমার কর্ম, এই আমার ব্রত,এই আমার ধর্ম।
রচনাঃ- ১৩-০৭-২০২২ খ্রীস্টাব্দ।