প্রিয়জনের সঙ্গে শেয়ার করুন :--👍

Loading

চিঠি দিও
হাকিকুর রহমান

ওই যে ওপাড়ার শ্যামলা বরণ মেয়েটা, খোঁপায় একটা কুঞ্জলতার কলি গুঁজে
লালপেড়ে সাদা শাড়িটা পরে, অনেক ভোরে এসেছিল, বাগানের কোনাতে
অবহেলায় বেড়ে ওঠা জুঁই ফুলের ঝাড় থেকে ফুলগুলো ওঠানোর তরে।
উদাসীন চোখে চেয়েছিল, আঙিনার পানে। কি যে মায়াবী সে চাহনি, যদি একবার চাই,
কেটে যায় হৃদয়ের যত ক্লান্তি, কি এক অবিমিশ্রিত আবেগ এসে ভর করে।
না, চেয়ে থাকাই হয়েছে শুধু, কোন কথা হয়নিতো কখনও তার সাথে।
তবে, মনের ভিতরে কয়েছি বহুবার, কইবো তারে, বাড়িতে পৌঁছে একটা চিঠি দিও,
নীল খামে ভরে। থাকুক না তাতে কিছু বানান ভুল, না থাকুক কোন ছন্দ তাতে-
শুধু কলমটা হাতে নিয়ে, কালির আঁচড় দিয়ে, কিছু একটা লিখে দিও।

প্রায় প্রতি বিকেলেই, হলুদ সাফারী শার্ট পরা ডাকপিয়নটা এপাড়া ঘুরে যায়,
আমি অধীর আঁখিতে রইব চেয়ে তার পথপানে, কখন হাতে দেবে তোমার চিঠিখানি।
যদি কোন কথা কওয়ার নাইবা থাকে, লিখে দিও, ভরা ফাগুনে বকুল ঝরার কথা।
মরা কার্তিকে, গাঙ্গের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় তাতে ঢেউ উঠেছিল কিনা,
পূর্ণিমা রাতে জামরুল গাছের ফাঁক দিয়ে জোসনার আলো উঠোনের কোণে এসে পড়েছিল
কিনা, এপাড়া আসার সময় ভোরের শিশির ভেজা ঘাসের ওপর দিয়ে হেঁটে এসেছিলে কিনা?

যদি কোন কথা কওয়ার নাইবা থাকে, লিখে দিও বাড়ির পাশের কৃষ্ণচূড়ার শাখে ফুলগুলো,
কি আবিরের চেয়েও লাল ছিল। আসার পথে, ঐ সেই দেবদারু গাছটার শাখে বসে কোন
ফিঙে পাখি শিষ্ দিয়ে উঠিছিল কিনা। আলতো পায়ের ছোঁয়ায় ঝরে যাওয়া শুকনো
পাতাগুলো মর্মর ধ্বনি তুলেছিল কিনা, শুনশান দুপুরে মেহগনি গাছে বসে কোন ঘুঘু গেয়ে
উঠেছিল কিনা, ফিরে যেতে যেতে কোন বাহারী প্রজাপতি, উড়ে এসে চুলের ওপর বসেছিল
কিনা, হঠাৎ হাওয়ায় শাড়ির আঁচলে জড়ানো জুঁইগুলো মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিল কি?
একটু নাহয় মিথ্যে করে হলেও কিছু লিখো, নাহয় একটু অনুকম্পা করে হলেও কিছু লিখো,
আর সবশেষে, সোজা হোক বাঁকা হোক, কাঁপা কাঁপা হাতে-
একটু গোটা গোটা অক্ষরে লিখে দিও, “ভালোবাসি!”

(“মিষ্টি প্রেমের কাব্য” থেকে।)

0

Publication author

1
কবিতা হচ্ছে ভাবের প্রকাশ। তবে তা হতে হবে শর্তহীন। সুতরাং শব্দ খুঁজে ফেরা নিরন্তর .....
Comments: 2Publics: 340Registration: 05-12-2020
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

পরিচিতি বাড়াতে একে অপরের লেখায় মন্তব্য করুন। আলাপের মাধ্যমে কবিরা সরাসরি নিজেদের মধ্যে কথা বলুন। জমিয়ে তুলুন কবিতার আড্ডা।