ছাইড়া গেলা মোরে
তুমি মাটির উপর একলা রাইখা
ছাইড়া গেলা মোরে —
ঘর বানলা মাটির ভিতর
আমি একলা একা মাটির উপর।
ক্যামনে থাকি একলা, জ্বালাতন করে ভিতরটা
তেষ্টা লাগে বারবার, ইচ্ছে করে যাইবার।
কতোকাল জোড়া বাইন্ধা ঘুমাইছি নকশিকাঁথার তলে
ঘরটাতে এলে ভিতরটা খালি খাঁ-খাঁ করে।
এদিকে, ওইদিকে, চারিদিকে ছড়িয়ে আছে স্মৃতি
ক্ষণিকের লাইগা পাইনা আমি নিষ্কৃতি।
ফজর নামাজ জামায়াতে করতে আদায় —
মোরগ ডাকা ভোরে, ডাকে না আর কেউ মোরে।
অন্তর-টা ভাজি হয় কৈ মাছের মতো –
যমদূত যেনো তোমার কাছে নিয়া যায় দ্রুত।
ঘরটাতে মোর বন্ধ হইয়া আসে দম —
শরতের রাতে আইসা নিয়া যাও আমায় যম।
মাটির ঘরটার মেঝেতে এখনো দ্যাখি তোমার পায়ের ছাপ
ওগো মোর প্রিয়তমা করে দিও মোরে মাফ।
কত্তো জ্বালাতন করেছি, নির্ঘুমতায় রেখেছি –
অভিমান ভরা বুকে, চিরনিদ্রায় গেলে শোকে।
যখন দ্যাখি আলনাতে ঝুলানো কাপড়চোপড়
আচমকাই ভিতরটা মারে মুচড় —
পান্ডুলিপি হ’য়েছে কিন্তু তোমার স্মৃতি হয়নি ধুসর।
তুমি নাই, বাতাসে উড়ে যাচ্ছে শিমুল তুলো
মাঝেমাঝে বস্তা ভরে নিয়া যায় পাশের বাড়ির কালু
তার বিনিময়ে দুমুঠো খাবার দিয়া যায় ফালু।
তোমার মৃত্যুর পর টোকিও এবং বার্লিন থেকে আসেনি তোমার মেয়েরা
ছেলেরা আসেনি মেলবোর্ন এবং নিউইয়র্ক থেকে
ক্যামন সন্তান ধরেছিলে পেটে —
আমি বেঁচে আছিলাম ব’লেই তোমাকে নিয়ে যেতে পেরেছি কবর পর্যন্ত।
খালি বাড়ি, আশপাশে কেউ নাই —
আমি মারা গেলে তো কেউ জানতেও পারবে না
মৃত্যুর কয়েকদিন পর যদি লাশ পঁচা দুর্গন্ধ বাতাসে
ছড়িয়ে যায় তাহলে হয়তো প্রতিবেশী খবর পাবে।
তোমারে ছাড়া আমার একদম ভাল্লাগে না —
তোমার বুকের ‘পর মাথা রাখতে —
খুউপ তাড়াতাড়ি আমি আসবো তোমার কাছে —
পরের জগতেও যাইবো তোমায় ভালোবেসে।
১৫/০৯/২০২২ইং, সৌদি আরব