নিরুপমার প্রতি
নিরুপমা নিরুপমা তোমায় বলি শোনো,
আমি তোমার বেনীমাধব আশা করি চেনো।
সেই যে বছর কুড়ি আগে তমাল তলায় বসে,
বলেছিলাম তোমায় নিয়ে আসবো আমার দেশে –
বউ সাজিয়ে রঙিন শাড়ি পালকি চড়ে আমার ঘর,
দিয়ে ছিলাম কথা তোমায় সাজবো তোমার বর।
তারপরে সব ওলট পালট ফিরে দেখি ঘরে ,
মৃত্যুশয্যায় আমার বাবা একশো ডিগ্রী জ্বরে-
নিরবতায় বধির সবাই কাটলো মিনিট কুড়ি ,
থমকে গেলো সময় ! বাবা হলেন দেহান্তরি ।
দিদির বিয়ে মায়ের ওষুধ ভায়ের লেখাপড়া ,
সময় জানে সব কিছু এই দু-হাত দিয়েই গড়া ।
বাজিয়ে ছিলাম তোমার জন্য যে বাঁশি; তা ফেলে-
আমি এখন অঙ্ক শেখাই প্রাইভেট ইস্কুলে।
কুঞ্জে অলি গুঞ্জে আমার ফুটলো তব কুঁড়ি,
বছর খানেক পরে গিয়ে-ছিলাম তোমার বাড়ি ।
ঝড় বয়ে যায় মনের মাঝে; বুকের ভেতর জ্বালা,
ঝড় কাটিয়ে পৌঁছে দেখি তোমার ঘরে তালা ।
পাশের বাসার স্বপন খুঁড়ো বললো আমায় ধরে,
তোমরা বাড়ি ছাড়া তোমার মাধ্যমিকের পরে ।
খুঁজে ফিরি তোমার আলো খুঁজে ফিরে মন,
খুঁজতে খুঁজতে উজার হলো তমাল তরু বন ।
স্বপ্নে খুঁজে পেলাম তোমায় লুকিয়ে ব্রিজের ধার,
স্বপ্ন ভাঙ্গা ঝাপসা স্মৃতি বছর কুড়ি পার।
নিরুপমা নিরুপমা এত দিনের পরেও,
মায়া দিয়ে বাঁধনিত আমাকে একবারো।
ভুল করেছো যাকে ভেবে আমার আপনজন,
আলোর নিচে সেদিন ছিল মামাতুতো বোন।
তোমার আশায় প্রহর গুনি আকাশ ঘন ছাই,
আজও আমি সাঁঝের বেলা তোমায় খুঁজে যায়।
ভরিয়ে দিলে মন আমার পুড়িয়ে দিলে বুক,
পোড়া বুকের কালি দিয়েই লিখবো তোমার সুখ।
একলা আমি একলা জগৎ একলা থাকি রোজ,
এত দিনে একদিন ওতো নাওনি আমার খোঁজ।
তবু আগুন, নিরুপমা দাউদাউ করে মনে,
আমি দোষী, আগুন আমায় পোড়াই সন্তর্পণে।