ফেলতে পারবো না কলম
আমাকে নিয়ে নাকি বাবার লজ্জা হয়
দশজনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে লাগে ভয়
সত্যকে সত্য বলি মিথ্যাকে লুণ্ঠিত করি পায়
বাবার গায়ে আগুন ঢেলে সমাজের লোকে পোহায় তা।
বাবা বলে “ছাড় না এসব, মান যে আমার যায়”
ছাড়তে যদি হয় এসব নাড়তে হবে শির
আমি বাঁচতে চাই হ’য়ে কাজী নজরুলের বিদ্রোহী বীর
নাড়তে পারবো না সর্ব কর্মে আমার এ উর্ধ্ব শির।
বাবা বলে “গঙ্গার মরা টেনে কেন আনতে যাস বাড়ি”
আমি দিতে রাজি সাতসমুদ্র তের নদী পাড়ি
হাত মেলাবো না যারা সত্যের সাথে করে কারসাজি
আমি তো সর্বময় ছিলাম সত্য নাশকারীদের কাছে পাঁজি।
বাবা বলে “হাল কেটে আনিস নে কুমির”
হাল কাটলে কুমির আসলে খাবে আমায় গিলে
সমাজের লোক বলবে না কটুকথা মুখ হবেনা আর পিলে
আমার জন্য মান হারিয়ে মরতে হবেনা তিলেতিলে।
বাবা বলে “আশা ছিলো মরবো তোর কোলে”
সত্যের শিখা প্রজ্জ্বলিত রাখতে ভয় পাইনা কলঙ্ক মাখতে
বুক কাঁপেনা সত্য লিখতে, নাহয় আমিই মরবো তোমার বুকে
থেকো তুমি বিদ্বেষপরায়ণ সমাজ ল’য়ে সুখে।
বাবা বলে “কর্ম করো এমন, সম্মান মিলবে পরম”
যে সমাজ সফল মানুষকে করে টানাহেঁচড়া
ব্যর্থ মানুষকে নিয়ে হাসাহাসি, কানাকানি
এমন সমাজের সম্মান আমি পদতলে রেখে পথ চলি পুলকিত চিত্তে।
যাদের সম্মান পুঁজি করে বাঁচতে চাচ্ছেন ধরায়
এমন মানবের সম্মান আমি চিতার আগুনে পুড়াই
আপনি যাদের মানুষ ভাবছেন মানুষ নয়তো তারা
হয়তো দ্যাখতে মানুষের মতো, ভেতরটা আস্ত বজ্জাত।
বাবা বলে “কি পাবে ভবঘুরের মতো ঘুরে?, ফির না এবার ঘরে”
স্বাধীনতাকে খোঁজতে নেমেছি পথে
হাটতে শুরু করেছি দুর্গম গিরি কান্তার-মরুপথ
স্বাধীনতা না পেলে ফিরবো না ঘরে শত্রুরা যদিও বধ করে ।
বাবা বলে ” সত্যের পেছনে দৌড়ায়ে কি পাবি? সত্যের যে হয়েছে ভরাডুবি”।
আমি লাগামহীন ঘোড়া সূর্যের মতো তেজদীপ্ত
বুকে অদম্য সাহস কলম আমার ক্ষিপ্ত খাপমুক্ত
ভরাডুবি সত্য করবো আমি উদঘাটিত উন্মোচিত।
বাবা সত্য কথাটা বলি, আমি যদি তোমায় জ্বালাতন করি
মুখ দ্যাখাতে ভয় হয়, বিরুদ্ধাচারণ করে সমাজ
আমি শুধরাতে পারবো না নিজেকে, ফেলতে পারবো না কলম
আমাকে ত্যাজ্য করে তোমার হৃদয়ে লাগিয়ে দাও ব্যাথা কমানোর মলম।