বাবার চাওয়া
বাবার চাওয়া
ওটা কি?
ব্যাঙ।
ব্যাঙ কি করে?
লাফায়।
কেন লাফায়?
ক্ষিদে পেলে লাফায়।
কিভাবে লাফায়?
তোমার এরকম হাজার প্রশ্নের
জবাব দিতে রাজি আছি।
একটুও বিরক্ত হবো না
কারন আমি বাবা।
তোমার জন্য আমি
কী-না করতে পারি?
আমার সাধ্যের মধ্যে
তোমার সমস্ত দায় মিটাতে
যে কোন বৈধ কাজ করতে
সদা প্রস্তত থাকতে পারি।
তোমার জন্য আমি আমার
বুকটা পেতে দিতে পারি
তোমার নিরাপদ শয্যার
একখানা শীতল পাটি।
আমার বুকে তোমার বুক
ঠেকিয়ে শু’তে পার তুমি।
নিশ্চিন্তে ঘুমুতে পারো
যখন আমার বিশ্বস্ত
দু’টি হাতের পরশ
তোমার পিঠ বুলিয়ে
সুনিদ্রা এনে দেবে
আদরের আলতো ছোঁয়ায়।
আমার পিঠ আমার ঘাড়
ঝিঁঝি ধরে অবশ হয়ে গেলে
সামান্য নড়াচড়াও করবোনা;
যাতে কোনভাবেই তোমার
আরামের ঘুম ভেঙ্গে না যায়।
তোমাকে সওয়ার বানিয়ে
আমি নিমেশেই ঘোড়া
বনে যেতে পারি।
তোমার চাবুকের আঘাতে
আমার নিতম্ব ফেটে
রক্তগঙ্গা বয়ে গেলেও
হাসিমুখে হামাগুড়ি দিতে পারি।
আমার ঘামে ভেজা
শরীরের উৎকট গন্ধে
তোমার বমন উদ্রেগ হলে
আমি আমার অঞ্জলি
পেতে দিতে পারি যাতে
কোথাও কোন পরিবেশ
নোংরা না হয়।
আমি তোমার খেলায়
সঙ্গ দিতে পারি
যতক্ষণ না তুমি ক্লান্ত হও।
আমি তোমাকে পিঠে নিয়ে
মাইলের পর মাইল রাস্তা
পাড়ি দিতে পারি; যাতে
তোমার হাটতে কষ্ট না হয়।
আমি তোমার ঘাড়ে, পিঠে
আমার নরম ঠোঁটের
চুমুতে চুমুতে আরামের
শিহরন তুলে দিতে পারি।
গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহে
নির্ঘুম রাত কাটাতে পারি
শুধু তোমাকে হাত পাখার
বাতাসে সিক্ত রাখতে গিয়ে।
আমি আমার সুন্দর স্বপ্নগুলো
বিসর্জন দিতে পারি শুধু তোমার
স্বপ্নগুলো যাতে পূরন হয় সহজে।
আমি আমার স্যান্ডেল সেলাই
করতে করতে আবু হোসেনের
জুতো বানিয়ে ফেলতে পারি;
তবুও তোমার জুতোজোড়া
যেন নতুনের মত ঝকঝকে
সুন্দর চকচকে পরিপাটি থাকে।
আমি আমার চেতনায়, নিঃশ্বাসে
বিশ্বাস করি ছেলে আমার বড়
না হয়ে মানুষের মত মানুষ হবে।
আমার একটা হাত তোলাই থাকবে
টুপি খোলা অভিবাদন জানাতে।
আমি অপরাপর সকল বাবার মত
চাতক চাহনিতে চেয়ে থাকতে পারি
শুধু তোমার জন্য; যতক্ষণ পর্যন্ত না
তুমি গায়ে গতরে বড় না হয়ে
মানুষের মত ভালো মানুষ হও।
Subscribe
Login
0 Comments
Oldest