ভয় জাগে
“মহা-বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত,
যবে উত্পীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না –
অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না ”
এমন কবিতা ধরাধামে কেউ আর আনিবে না।
ভয় মৃত্যুর ভয় —— লাশের ভয়—গুমখুনের ভয়
নির্যাতন নিপীড়নের ভয় — জেল হাজতের ভয়।
ঘুমের ঘোরে হঠাৎ আঁতকে উঠি —
নিজেকে ঝুলতে-দোলতে দ্যাখি ফাঁসির রশিতে।
আঁতুড়ঘরে সন্তান শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করার মতো
সত্যকে গলা টিপেটিপে হত্যা করতে হবে বেঁচে থাকার জন্য —
এই পৃথিবীতে একটু শ্বাস নেওয়ার জন্য।
আর না-হয় তসলিমা নাসরিনের মতো লিখতে হবে–
“ধর্ষিতা হয়ো না,পারো তো পুরুষকে পদানত করো, পরাভূত করো,
পতিত করো, পয়মাল করো
পারো তো ধর্ষণ করো,
পারো তো ওদের পুরুষত্ব নষ্ট করো”।
আর না-হয় লিখতে হবে —
তুমি সুন্দর — আমি বান্দর
কলা গাছে টিয়া — তোমার আমার বিয়া।
ঠোঁট সুন্দর — নাক সুন্দর — আরো সুন্দর বুক
আমার মতো কেউ দিবেনা তোমায় দুদণ্ড সুখ।
হৃদয় ভূমিকম্পের মতো থরথর করে কেঁপে উঠে
জনশূন্য, লোকালয়হীন মরু প্রান্তর খুঁজে।
ভয় জাগে তসলিমা নাসরিনের মতো নির্বাসিত হওয়ার
কবি হাফিজের মতো ধরে মন্ত্রী পরিষদে নিয়ে যাওয়ার।
অন্যায়, অবিচার, জোরজুলুম লুটতরাজের বিরুদ্ধে সুউচ্চ করো যদি কণ্ঠস্বর —
চোখের পলকে নিরুদ্দেশ হ’য়ে যাবে —
নিথর দেহ ভাসতে থাকবে বুড়িগঙ্গায়।
এখন থেকে শুধু লিখবো —
আমি অপেক্ষা করবো হিমালয়ের চূড়ায় —
তুমি নীল শাড়ী, নীল চুড়ি পড়ে এসো আকাশ ছুঁবো।
তোমার নিতম্বের ভাঁজে সমুদ্র সফেন দ্যাখবো —
চোখের ভেতর দ্যাখবো অরণ্য —
বাবুইপাখির মতো বুনবো স্বপ্ন —
চুরমার করে দ্যাবো ছিলো যতো দুঃস্বপ্ন।
কেউ আর দ্যাখতে যাবেনা যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে —
ক্যামন করে ঘুরছে মানুষ —
ধাক্কা মেরে ট্রায়াংগেলে ফেলে বিজয়োল্লাস করবে।
১৫/০৬/২০২২ সৌদি আরব