মানস কন্যা
হে মানস কন্যা –
আমার কল্পনা-রাজ্ঞী মনোহারিনী সুরঙ্গনা।
মনোমোহিনী মোর মনোচারিণী কল্পনাবিলাস!
কেবলি অলীকে গমনাগমন কল্পলোকে বসবাস।
কল্পনাচারী! হৃদয়ে তোমার যে প্রতিমা চিত্রণ
আজি ভুবনে করি তারে অন্বেষণ –
দিগ-দিগন্তে দিকে দিকে খুঁজি সেই মনোহরা,
চন্দ্রমুখী হরিদ্রাঙ্গ মীনাক্ষী-চোখ মায়া ভরা,
সুশ্রী সুদর্শনা সুর-সুন্দরী হুরপরী-
খুঁজি তোমায়, হে মোর মানসচারী!
সমুদ্রের গভীর রহস্যতলে, উজানি নদীর স্রোতে –
গহন অরণ্যের গহীনে ঘনবীথি পথে
মাঠে-ঘাটে লোক-লোকালয়ে পল্লি হতে নগরে,
মনিপুরীর পাহাড়ি টিলায় বেদেনির বহরে।
(হায়)তব অন্বেষনে লঙ্ঘিত যুগ যুগ অহোরাত্র দিবা-নিশি-
আজ ক্লান্ত মানস-অন্বেষী!
উদাসী মন অন্বেষী-পথিক ভাবে এ বিরলে-
(হায় রে) ফেরারী মন শুধু পথে পথেই ঘুরিলে।
যে মানস-প্রেমীর প্রেমে পরবাসী
আজো হলো না দেখা যার প্রেমে-সন্ন্যাসী।
সিন্ধু লহরের মত উদ্বেলিত আর ঝড়ের মত উথলে
উদ্রেক যৌবন উদগ্র কামনার শিখা জ্বলে –
যার তীব্র লেলিহানে দগ্ধ বিদগ্ধ সন্ন্যাসী-প্রাণ,
পথ-শেষ সহসা পোড়া প্রাণে গৃহ-টান।
বেলা শেষে পাখি নীড়ে! যে মানস কন্যা অন্বেষণে,
বিবাগী মন ঘুরিল ভুবনে-
আজি পেলো তারে আঁচল ভরা ফুলে প্রতিক্ষায়-
সপ্ত-জনম ধরে, অবহেলিত বধুর অবগুণ্ঠিতায়।