মানুষ বড্ড অভিমানী প্রাণী
দিনশেষে-
মানুষ একা। শত কােলাহলের
মাঝেও প্রতিটি মানুষ একা; দৈবপাকে বাঁধা।
“সব পাখি ঘরে আসে- সব নদী- ফুরায় এ-জীবনের
সব লেনদেন; থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার…”
সেই ফুরসত কই? ইট-পাথরের এই শহরে- সবাই ক্লান্ত;
খালি ছুটে আর ছুটে! প্রিয় মানুষটার মন খারাপ হলে কিংবা…
কি করে সে বুঝবে, তার অব্যক্ত অভিমান-
মনের রাজ্যে যােজন যােজন দূরে
যাদের অবস্থান?
একটা ফােন কলের অপেক্ষায় তীর্থের কাকের মতাে বসে থাকে
দু’জনেই, কিন্তু শেষমেশ- ফােনটা আর করা হয়ে ওঠেনা।
ওই যে- তীব্র একটা অভিমান, চাপা একটা কষ্ট,
অব্যক্ত ভাষা…
শক্ত করে বুকের সাথে চেপে ধরা কিংবা চােখের সামনে আলতাে করে
হাত ছুঁয়ে চােখের পাতা বন্ধ করে দেয়া- অনেকটা ইচ্ছে করেই করা
হয়ে ওঠেনা। ওই যে- তীব্র একটা অভিমান, চাপা একটা কষ্ট,
অব্যক্ত ভাষা…
তার এলােমেলাে চুল, লালচােখ কিংবা রাতের ঘুম অথবা দুঃস্বপ্ন কিংবা
মাঝরাতে মাথার নিচের সরে যাওয়া বালিশটা ঠিক করে দেয়া অথবা
শেষরাতে যখন খানিক হিম নামে- তখন ওম চাদরে জড়িয়ে
দেয়ার ব্যাপারটায়… মায়ার চেয়ে অধিকার বােধের
বিষয়টাই বেশি জড়িয়ে থাকে- দূরত্বটা যে বড্ড
বেশি, হৃদকম্পনটাও অস্পষ্ট।
তার জন্মদিনের কথা, প্রথম দিনের কথা; স্পর্শ ও অনুভুতির কথা- ঠিকই
মনে থাকে- অভিমানে… “দূরে থাকা মানে… ভুলে থাকা নয়, ভুলে যাওয়া
নয়- কাছে থাকতে না পারার আর্তনাদ; কখনাে কখনাে
অনুতাপ, অনুশােচনা!” দিনশেষে- মানুষ বড় একা।
মানুষ- বড্ড অভিমানী প্রাণী!
(প্রতিকবিতা : মূল কবিতা- মানুষ বড় অভিমানী; কবি- সাদাত হোসাইন)