রাতের ত্রি-প্রহরে এসেছিলে তুমি (শুভ জন্মদিন)
ঘুম নেই, ঘুম নেই সারা বাড়ি জুড়ে
থমকে দাড়িয়ে ছিলো পৃথিবী বেদনার তোড়ে
এমনি এক রাতের ত্রি-প্রহরে এসেছিলে ক্রোড়ে
সোনালী রবি উঠেছিলো হেঁসে স্নিগ্ধ ভোরে।
তোমার কান্না শুনে থমকে দাড়ানো পৃথিবী শুরু করে পথ চলতে
মুখ নাড়িয়ে কিছু একটা চেয়েছিলে বলতে
সবার মুখে দ্যাখে ছিলাম হাসির ফুল দোলতে
অনেক চেষ্টা করেছিলো আহত দেহ তুলতে।
তুমি যখন এসেছিলে ধরায়, বৃষ্টি ঝরেছিল তপ্ত খরায়
ঝলমলিয়ে উঠে ছিলো ছোট্ট কোঠরি –
সবাই মুখ রাঙিয়ে ছিলো খেয়ে পান সুপারি।
তোমার তরে হৃদয় সাগরে আশার তরী করি নোঙর
বেদনা গুলো নেচে বেড়ায় পায়ে লাগিয়ে ঘুঙুর
শক্ত হাতে ধরি হাল, ছিঁড়ে না যেন কভু পাল।
তব জননী যখন শুনেছিলো তব আগমনী গান
বুকে জড়িয়ে কপোলে চুম্বন দিয়ে ব’লে ছিলো –
“মোর ভাঙা খুপরিতে এলো সোনালী চাঁন”।
আজকের রাতের ত্রি-প্রহরে এসেছিলে তুমি
ব্যাথা ভরা বুক বানিয়ে দিলাম তব বিচরণ ভূমি।
চোখের পলকে কেটে গেলো একযুগ —
দিনে দিনে বাড়ছে শোক, বাড়ছে তব হৃদয়ের অসুখ।
একই বৃন্তের তিনটি ফুল ছিঁড়ে নিলো ঝড়ে
বারোটি বছর কেটে গেলো জ্যান্ত মরা মরে
থেঁতলে গেলো তিনটি জীবন ত্রীমোহিনী বাঁকে
নিশীথে বেদনারা আসে মৌমাছির ঝাঁকে।
যাদের নিবিড় পরিচর্যায় তব বেড়ে উঠার কথা
তাদের তীব্র অবহেলায় হ’য়ে গেলে একেলা
ত্রিভুজ গড়ে অবুঝ ব’লে পেতে চাই নিস্তার
দাও আমায় যতো আছে ধিক্কার।
যখন ভাবনার আকাশে ঘুড়ি উড়ায় তোমার চিন্তা মস্তিষ্কের সুতোয় টান পড়ে, বাধাগ্রস্ত হয় রক্ত চলাচল
মাথার তিব্র ব্যাথায় শুয়ে থাকি একপাশে –
কখন জানি দ্যাখো আমায় সফেদ ধুতিতে মুড়ানো লাশে
তারপর তব বিচরণের এক বিস্তৃত মাঠ ল’য়ে কে দাঁড়াবে তব পাশে?
শত বেদনা, কষ্টের সহস্র পাথর বুকের অলিন্দে চেপে
নিজেকে তুলসীগাছের মতো জীবিত রাখছি
তোমার স্বপ্নগুলো প্রাণ দিতে এই ভবে।
মনে হচ্ছে এইতো সেইদিন তুমি কান্না করেছিলে
তোমার আগমনে খুশির বাধভাঙ্গা জোয়ার এসেছিল ঘরে
বারোটি বছর কেটে গেলো, জল এলো চোখ ভরে।
দোয়া মাঙ্গি প্রভুর দরবারে
দুঃখে যেন নিপাতিত না করে তোমাকে
সারাজীবন মুখ রাখেন যেন হাসোজ্জল
চোখে কখনো আসেনা যেন জল, করে না যেন ছলছল।
০৯/০৮/২০২২ সৌদি আরব