সন্ধ্যামালতীর মালতী – অসীম চক্রবর্ত্তী
ঐ সন্ধ্যামালতী রোজই উঠতো নেচে
তুমি তুলে ফুল আমায় দিতে বেছে
ফুটে অমলিন রইতো পুরো রাতে
রবিকরে রহিত নেতিয়ে যেত প্রাতে
কখনো দিতে অনেক কাছেতে এসে
বিনা সুতোয় গাঁথিতাম আমি হেসে
সন্ধ্যে হলেই ফুল-কতনা ফুটতো
এক বাউন্ডুলে প্রায় ওখানে জুটতো।
মনে কি পড়ে – গ্রীষ্মের একদিনে
মালা পরিয়েছিলাম তোমারে আনমনে
দেখে বিদ্রুপে কোমড় দুলেদুলে
বাধিয়ে ঝগড়া ঐ বকাটে বাউন্ডুলে।
মনে কি পড়ে-শরতের একদিনে
পরিয়েছিলে আমারে তুমিও আনমনে
দুহাতে টেনে বুকে আমারই চোখে চোখে
চটিয়া বকাটে রাগে আমারে তোমারে দেখে।
আজ শীতেরই একদিনে –
বিদায়ে সন্ধ্যেবেলা …
গাঁথিনী আমি তোমার পড়ার মালা
ফোটেনি মোটেও শীতে মালতী ফুল
আজ আসোনি তুমি – ভীষণ করেছো ভুল
আমি মালতী, সন্ধ্যামালতী পাশে
হঠাৎ সেই বকাটে সামনে আসে
বলিল শুধু নিজেরই মনের কথা
অস্বীকারে আমায় দিয়ে ব্যাথা
রুমালে চাপা দিয়ে আমার নাকে
পালিয়ে গেল নিয়ে আমায় ফাঁকে
হঠাৎ যখন তন্দ্রা আমার কাটে
আমি শুয়ে হাত পা বাধা খাটে
অত্যাচারে ক্ষত আমার দেহ
রক্তাক্ত করেছে আমারে কেহ।
আজ অপরাধী আমি সমাজের বাঁকা চোখে
লোভী পুরুষেরা মত্ত আজি আমারই দেহ ভোগে
পড়ন্ত বিকাল ফুঁপিয়ে কাঁদে – নিরাপদ আর নয়
লোলুপ হায়নারা মেতেছে দেখতে – আজকে আমার ক্ষয়।
পালিয়ে রাতের অন্ধকারে-দাড়িয়ে ভাঙা ছাদে
তোমার মালতী তোমায় ভেবে – ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে
আমি চললাম পরলোকে হয়ে নষ্টা বাজে
বাঁচিয়ে রেখো এই মালতীরে সন্ধ্যামালতী মাঝে
সন্ধ্যামালতী ফুটে সন্ধ্যায় – রহিত শেষ প্রহরে
আমি মালতী ফোটার আগেই – রহিত দ্বীপ্রহরে।।