হাত
আমি ধরিনি কোনো মেয়ের হাত
শুধু আমার প্রিয়তমার হাতটি ধরবো বলে
আমি হৃদয়ে আঁকিনি কোনো অন্য মেয়ের ছবি
শুধুমাত্র তোমার ছবি আঁকবো বলে।
আমি দেখেছি স্বপ্ন শুধু তোমাকেই নিয়ে
বলতে চেয়েছি কথা নীরবে তোমার মনের সাথে,
আমি শহরে শহরে হেঁটেছি লক্ষ বছর ধরে
নিমগ্ন হয়ে ভিজেছে ব্যস্ত পথের ব্যারিকেড।
আমি খুঁজিনি তোমার মনের প্রেমের চিঠি
কিন্তু আমি লিখেছি নীল প্রেমের চিঠি
ঢের বেশি প্রিয় তোমাকেই দেবার জন্য।
তুমি বোঝোনি আমি খুঁজিনি অন্য কারো মন:
জেনেছি আমি ব্যথা দেওয়ার জন!
তুমি হয়তো হাঁটতে চেয়েছো
অন্য মানুষের হাত ধরে ভিড়ের ভিতর
তবুও আমি ভালোবাসার শহরের পথটি দিয়ে আজও চলি।
আমি হাঁটছি শুধু
দূর আকাশের হাতটি ধরে
ভিড়ের অধিক ভিড় সেও তো ভিড়
লক্ষ্য তারার ভিতর থেকে।
আমি নীরবে ঝরে পড়ি
গোলাপের পাপড়ি হয়ে।
তুমি স্বপ্ন দেখো আলোর প্রদীপে
আর আমি স্বপ্ন দেখি ভাঙা কাঁচের নীচে।
কখনো বাতাস বয়ে যায়
প্রিয়তমার লম্বা কেশের উপর।
রাত্রি নামে ঘুমিয়ে যায় তারা
নক্ষত্রের বুক থেকে একে একে ঝরে পড়ে
আমার প্রেমের পাতা।
প্রিয়তমা জাগে যখন
আকাশের একটি তারা জ্বলে তখন।
আমার পিপাসা রক্তকরবী ফুলের মালা খেয়ে নেয়
ঘাসের ডগায় তখন সবেমাত্র হেমন্তের একটি শিশির বিন্দু জমে।
কত জীবন কাটিয়ে এসেছি আমি
আজ এই চৌদ্দশ আটাশ বঙ্গাব্দে হাজির হয়েছি।
তবুও আমি আমার পুরানো প্রিয়তমাকে-ই
পেতে চাই যুগ থেকে যুগের পরেও।
আমার নীল চোখের গহ্বরে
আজ থেকে লক্ষ বছর আগে রেখেছিলাম
প্রিয়তমার হাতের ছোঁয়া।
আমার বুকের মধ্যখানে তখন
একটা সূর্যের পুরো ক্ষমতা।
এমন করিয়া একটি প্রিয়তমা
আমার হৃদয়ের তিলোত্তমা।
তার হাত আজও আমার ভাবিয়ে তোলে
সে তো আমার লেখার অনুপ্রেরণা।
শেষ বসন্তের হলুদ প্রহরে
প্যারিস শহরের আইফেল টাওয়ারের নীচে
কত প্রেমিক প্রেমিকা আড্ডা দেয় আজও;
আমি নীরবে চলে আসি সেখান থেকে
টাওয়ার অফ লন্ডনের পথে পথে।
শহরের ল্যাম্পপোস্ট জ্বলে
আমার লেখা শুরু হয় গভীর রাতেও।
হারিয়ে ফেলেছি একটা জীবনের পুরোটা আলো
বেঁচে আছি চাতক পাখির মতো!
তারপর আমি ঘুমিয়ে যায়
চোখের বিছানায় পালক সাজিয়ে।
মেঘেরা দূর থেকে বহুদূরে চলে যায়
সে আজও ফেরে না!
আবহকাল শেষ হয় তারই অপেক্ষায় থেকে থেকে
শতাব্দী থেকে শতাব্দী গুনে গুনে।
তারপর একটি শেষের রাত্রি নামে
আমি হারিয়ে যায় সেদিন থেকে,
মিশরের পিরামিডের সমাধি
আমারে ডাকে ‘শূন্য’ খাঁচা পূরণ করতে।।