আমি কুলাঙ্গার – অসীম চক্রবর্ত্তী
রাতের চাদরে ছায়াছন্ন বটবৃক্ষ তলে
ভোরের লজ্জা তখনও ভাঙেনি পাখির কলকলে
দূর্বা ঘাসে শিশির কণার স্পর্শ লয়ে পায়ে
গিয়ে দেখি স্বর্গত পিতা বটবৃক্ষের গায়ে
এখনো জ্যোতির্ময় অথচ গম্ভীর যেন এসেছেন নবি
দ্বিধাভরা মুখে করুণ চোখে দেখিয়ে একখানি ছবি
মৃদুস্বরে, বললো মোরে ছুঁয়েনে ওনার পা
চিনিস কি তুই! দেখরে উনি তোরই নিজের মা
স্মৃতির বেদনায় নিঃস্বার্থে তাহার প্রতিটি রক্ত বিন্দু
বহিয়া তোরই জীবন নদীতে মিশেছে জীবনের সিন্ধু
ধিরে ধিরে তোর তাচ্ছিল্য, অবিষহ্য হয়েছে হায়
একটু সান্নিধ্য একটু ভালবাসা এই তো শুধু চায় ।
ঘন কুয়াশাকে ভোরের আলো তখনও গ্রাস করেনি
পিঠে হাত রেখে বললো মা তোর ভালবাসা যে পায়নি
অকৃতজ্ঞতার অনুশোচনায় শিহরণ জাগিল মনে
আচম্বিতে পড়লাম লুটিয়ে আমার পিতার চরণে
মনে পড়লো দায়িত্বজ্ঞানহীনতার একেকটি মুহূত্ত্ব
এতদিনে যাহা বাড়িয়েছে মোদের ঐ নির্মম দুরত্ব
পিতা হঠাৎ অদৃশ্য হলেন জেগে উঠলেন রবি
শুধুই পড়ে রক্তমাখা মায়ের ওই ছবি
আমি অঝরে কাঁদতে লাগলাম ছুটলাম উর্দ্ধশ্বাসে
একি আমি যে আটকে পড়েছি শিশিরে দূর্বা ঘাসে..
পত্নীর ডাকে ঘুম ভাঙে মোর দেখি শুয়ে আমি ঘড়ে
দুঃখী মা যে স্বর্গবাসী ত্যাগই করেছেন মোরে ।
মায়ের শ্রাদ্ধ্য করতে হবে বাকি কয়েকটি দিন
অনুভব হলো কুলাঙ্গার আমি নিঃসঙ্গ ছায়াহীন ।।