মায়ের হুমকি
আমি কদিন ধইরা আইতে পারিনা
জ্বরে ধইরা এক্কেবারে হুতাইয়্যা ফালাইছে
হুইত্যা হুইত্যা হালি হুনছি তোমডার কতা
মনে করাইয়্যা দিছো স্কুল জীবনের পারছাপারছি।
আমি কুদ্দুরার লাইগ্যা আরাইয়্যা গেছিলাম
মনে হইতাছিলো মা ডাকতাছে —
কৈ গেছত-রে মিটু?
বাত বারছি, হাইতে আয়
দেরি করলে বাত জুরাইয়্যা যাইবো গা কইলাম।
মনে হলো আমি প্রতিত্তোরে কইতাছি —
আইতাছি আম্মা আর কুদ্দুর হানেক
বোর-টা দিয়্যা, কাফর-টা দইয়্যা আইতাছি
আফনারা হানা আরম্ভ কইরা দেন।
আবার মনে হইলো, আম্মা কইতাছে –
হাইনয্যা হইতাছে কইলাম –
হেলা-মেলা বন্ধ কইরা, হারিকেনে তেল-মেল দিয়া
আত-মুখ দইয়্যা পড়তি-ব।
মনে হইতাছিলো মা কুয়োর পার গিয়া –
হাঁস গুলোরে ডাকতাছে “আয় আয় চু–চু–চু আয়”
মায়ের আওয়াজ হুনে হাঁস গুলো প্যাঁক প্যাঁক করে উত্তর দিয়ে
এক এক করে উঠে আডা শুরু করলো টিলা-টালা মুড়া বেয়ে বাড়ির দিকে।
মনে হইতাছিলো আব্বা কইতাছে —
এই পড়স না কিরে?
আওয়াজ কইরা পড়, শব্দ কইরা পড়
গুনগুন কইরা কিতা পড়স?
পাশের বাড়ির মনিরের পড়া রাস্তা থেকে হুনা যায়
আর তর পড়া আমি ঘরে থাইক্কাই হুনতে পাইনা
গায়ে শক্তি নাই?
খাস-না নাকি হারাদিন?
এই পারা, হেই পারা ঘুইড়্যা বেড়াইতে বাল্লাগে
পড়ালেহা বাল্লাগে-না
কালকা থাইকা গিয়া মুনি দিবি –
কামলা দিবি, দেকবি ক্যামন লাগে।
মা এমনে কইলে, আমি যাইতাম হ্যামনে
ভাবি এখন দিনগুলো কাইট্টা গেলো ক্যামনে।
যেদিন স্কুলে না গিয়া বনে-বাদাড়ে ঘুইরা বেড়াইতাম
মা চেইত্তা গিয়া গালি দিতো –
বাওড়াইল্লার ঘরের তেওড়াইল্লা –
আজ্জা বাড়িতে আইস –
তর একদিন আর আমার একদিন।
মা’র মুখে এমন হুমকি হুইন্না –
বাড়ির পথে পা-ও রাখতাম গুইন্না-গুইন্না।
১৪/০৯/২০২২ইং, সৌদি আরব