কালচক্র
ওই ডাকছে কেউ ওপার আকাশ থেকে,
এবার চল যাব নতুন দেশে,
দেখলে তো খোলস পরা নকল মানুষ কিছু,
আতিথ্যময় সর্বহারার বেশে।
অনেক বছর অতীত সময় শেষে,
এসেছিলে আঁধার ভরা ভোরে,
এক নরম কোলে উষ্ণ ঘেরাটোপে,
অজানা মায়ের আলিঙ্গনে মিশে।
এক শক্ত হাতের মুঠো ধরে তুমি
দেখেছিলে এ পরম তীর্থ ভূমি,
মেরূদন্ড নরম তোমার তখন,
পিতা তোমায় ঘিরে ছিল যখন।
জিহ্বা ভরে পড়ল গরম আহার,
ভূষনময় খেলছে রঙের বাহার,
অলক্ষ্যে তে লুকিয়ে আছেন তারা
অভুক্তা আর নিরাভরণ যারা।
দেব দেবী কে “বাবা” “মা” ডেকে,
বিদ্যারূপে জগত জানার পালা,
সময় বয়ে চলল অবিরত,
নিশ্চিন্তে আদর যত্নে থেকে।
ক্ষইতে লাগল একটু করে তারা,
প্রকৃতির সময় কলে পিষে,
পুষ্ট হয়ে চললে তুমি বেড়ে,
তোমার জন্য সর্বত্যাগী যারা।
রূপে রসে গন্ধে স্পর্শ মাঝে,
নবীন সবুজ শক্তিপূর্ণ কায়া,
অবশিষ্ট পরে আছে নিচে,
রক্ত নিংড়ে ক্লান্ত শ্রমে ভিজে।
চক্ষু ফোটার আনন্দের তালে,
বেড়িয়ে গেলে অতীত টুকু ছিড়ে,
নিজের ভালমন্দ টুকু বুঝে,
নতুন সুরে জীবন ছন্দে দুলে।
সময় আবার চলল স্রোতের মত,
ধূসর হল দেব দেবীর ওই স্মৃতি,
নতুন সঙ্গী মোহনবেশে এল
লোভ মোহ আর প্রেম কলাতে রত।
এমনি বুঝি কালচক্রের গতি
জীবন ছবির রঙ করল ফিকে,
অতীত বুঝি আসছে আবার তেড়ে,
ক্ষয় ধরল সঙ্গোপনে অতি।
শ্রান্ত তুমি ভগ্নদশায় বেঁচে,
সঙ্গী তোমার নিরস হল ক্রমে,
নতুন জনম ভবিষ্যতের নামে
তোমার রক্তে তোমার বুকে নেচে।
ওপার আকাশ ডাকছে তোমায় দেখ,
সঙ্গী গেছে কখন পিছু ফেলে,
জীর্ণ খোলস পড়ল এবার খসে,
কাল চক্র খেলা মনে রেখো।