শারদীয়া আবাহনী
হিয়া মাঝে রিনিঝিনি আশ্বিনের পদধ্বনি
দশভুজা অকাল বোধন,
মেঘমুক্ত নীলাকাশ কাশফুল মধুবাস
চৌদিকে মহা আয়োজন।
কিশলয় দলে দলে নাচে গাহে হাসে খেলে
পরণে নূতন জুতা জামা,
কিন্তু হায়রে বিধি আহা কোন হারানিধি
চোখে জল–মুখে শুধু মা মা।
নাহি কেহ নাহি গেহ শীর্ণ ক্লিষ্ট দেহ
হতভাগ্য ভারী অসহায়,
পরিশ্রমে প্রাণপাত ললাটে চপেটাঘাত
আর বুঝি সহা নাহি যায়।
পানীয় বিপণি ‘পরে নফরের কর্ম করে
অর্ধাহারে কাটে অহোরাত্র,
বয়স পাঁচ কি ছয় ছোট্ট ছেলেটি হায়
সততই উপেক্ষার পাত্র।
আপণের খুব কাছে পাঠশালা এক আছে
শিশুদের কলতান হাসি,
অনাথ শিশুটি ভাবে কেন বা সে এল ভবে
অশ্রুপাতে গণ্ড যায় ভাসি’।
পিতৃমাতৃহীন অসহায় আর্ত দীন
এক নয় বুঝি অগণিত,
দেবীর পূজার ক্ষণে হায় কি পড়ে না মনে
নাকি রবে চিরবিস্মৃত !
আহ্বান করি সবে আগুয়ান হও এবে
মুছায়ে দাওগো অশ্রুধারা,
শারদ উৎসব কালে শীর্ণ দীর্ণ ভালে
শোভে যেন সদা শুকতারা।
সামান্য সহানুভূতি মমতা ও স্নেহ প্রীতি
কেহ আর রবে না কো ম্লান,
ধরণীর রঙটিরে রাঙিয়েই দিতে পারে
ভাষা যদি লভে মূক প্রাণ।
যে করে দীনের সেবা তাহার তুল্য কেবা
সে প্রকৃত ঈশ্বর সেবী,
অনাথ আতুরে পূজি’ লভিবে নিজেরে খুঁজি’
এই আশা ব্যক্ত করে কবি।
আশ্বিনের পদধ্বনি রূপসী প্রকৃতি রাণী
নব সাজে সজ্জিত আজি,
একমন একপ্রাণ এস করি আর্ত ত্রাণ
মহামায়া জগন্মাতে পূজি।
——————————————————