কলঙ্কিনী কলকাতা – অসীম চক্রবর্ত্তী
সকাতরে এক শিশু মলিন ছিন্নবস্ত্র খালি পা
জনতার ভিড়ে কোথায় যে হারিয়েছে তার ভিখারিণী মা
হাতে ভিক্ষার পাত্র নিয়ে মণ্ডপে মণ্ডপে
যেন সমগ্র কোলকাতা বঞ্চিত করেছে তারে গভীর সন্তাপে।
এক নামী পূজা মণ্ডপ দর্শনের ফাঁকে
একবার ভারী বাজেটের মণ্ডপ দেখি একবার তাকে
শোকসমাচ্ছন্ন ভিখারি শিশু নেমেছে জনতার ঢলে
ধিক্কৃত মানবতার এই জাঁকজমকপূর্ণ বিহ্বলে।
এদিকে কলকাতা আজ লেসার লাইটে মেতেছে
সেজেছে আলোর চেনে
যেন সারা বিশ্বের জোৎসনা নেমেছে
শহরের এ প্রাণে, এ সারদ সনে
মায়াবী আলোর রোশনাই সেজেছে কলকাতা
আজও কলকাত্তাই হয়ে –
ঐ কলঙ্কিত চাঁদের ন্যায়
নিরন্ন মানুষের হাহাকার বুকে নিয়ে।
যদিও নতুন পোশাকে সজ্জিত লক্ষলক্ষ ভিড়ে ছিন্নবস্ত্র শিশুর ব্যাতিক্রমী বিচরণ
কারণ, আকাঙ্খা তার চাওয়া পাওয়া সবই যে বারণ
তাকে যে ব্যাতিক্রমী আক্ষা দিয়েছে এই সজ্জিত কলকাতা
তাকে যে উপেক্ষিত করেছে এই তিলোত্তমা কলকাতা
আজ কোটি কোটি মানুষ ভাসছে শহর বক্ষে
কোটি কোটি অর্থ ব্যায়ের জোয়ারে
অথচ ব্যাতিক্রমীর নতুন পোশাক নতুন খাবার…
বরাদ্দ নেই এই শহরে!
নতুন পোশাকে নতুন খাবারে ভরিয়ে মন একটিবার হাসতে
সেও যে চায়, তার অন্তরেও সন্জাত হয় এই আনন্দে ভাসতে
তবুও সে নির্বাক অম্লান বদনে লিপ্ত মাগনে শুধু-শুধু চাই একটি টাকা
ক্ষুদা নিবারণ লক্ষ্যে জন সমক্ষে – এ যেন কলঙ্কিনী কলকাতারই ছবি আঁকা।।