খুব ইচ্ছে করছে জড়িয়ে ধরতে
২৮শে জানুয়ারি মহানগর ট্রেনের অপেক্ষায় বসা ছিলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে
অকাজের কাজে ডুবে থাকায় আমি খেয়াল করিনি তুমি নীরবে এসে কখন আমার পাশে বসেছিলে।
তোমার মৃদু ধাক্কায় চৈতন্য ফিরে এলে তাকিয়ে দ্যাখি তোমাকে
অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছো আমার দিকে।
ক্ষানিকটা সরে জায়গা দিয়েছিলাম পাশে বসার
গায়ের সাথে গা এলিয়ে বসে অনেক কথায় ব’লে ছিলে
তুমি ফিরে আসতে চাও আমার বুকে
রাখবো কি-না তোমায় চিরসুখে
জল আসে যদি কভু দুখে
মুছে দিয়ে জড়িয়ে ধরবো কি-না এই বুকে।
কলঙ্কের ভয় ছিলো মনে, দ্যাখে নেই যদি কেউ গোপনে
কলঙ্ক রুখতে মুখের মাস্ক চাচ্ছিলেনা খুলতে।
সয়ছিলোনা মন, তব মুখ দ্যাখতে চেয়েছিল কিছুক্ষণ
পাশের কেন্টিন থেকে দুটি কফি এনে একটি দিয়েছিলাম তোমায়
আর অন্যটিতে আমি চুমুক দিচ্ছিলাম।
মুখের মাস্ক খোলে যখন কাগজের কাপে চুমুক দিচ্ছিলে
আমি একদৃষ্টিতে মুখপানে তাকিয়ে ছিলাম।
কতটা নির্মল মুখ, ঠোঁট আর চোখ
শিশিরবিন্দু সম একফোঁটা কফি ঠোঁটের এককোণে ঘাপটি মেরে বসা ছিলো
হাতের আলতো ছোঁয়ায় তা পিষে দিয়েছিলাম।
ট্রেনের ইঞ্জিন স্টেশনে প্রবেশের পূর্বে হুইসেল দিলে
কেঁপে উঠে তোমার হৃদয়, এক্ষুনি ছেড়ে যাবো
টপটপ করে চোখের জল বেদানার মতো গাল বেয়ে নিচে গড়াচ্ছিলো
যখন মুখোমুখি দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে মুছে দিচ্ছিলাম
তুমি ব’লে ছিলে “খুব ইচ্ছে করছে জড়িয়ে ধরতে”।
ট্রেনের ভিতর থেকে তাকাতে পারছিলাম না তোমার বিবর্ণমুখ পানে
বিচ্ছেদের বেদনা খামচে ধরেছিলো তোমার অন্তর
ট্রেনের পিছুপিছু অনেকটা দূর হেঁটে গিয়েছিলে
একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলে অদৃশ্য হওয়ার পূর্বক্ষণ পর্যন্ত।