ঝরে পড়বি, এই টবের গাছ থেকে?
বারান্দার এক কোনে রাখা,
মাটির টবে চারাগাছটি বেড়ে উঠছে।
আলো, মাটি, জল, হাওয়ায়,
একটু, একটু করে প্রতিদিন বাড়ছে।
এত সবুজ কি করে হয়!
মাথা দুলিয়ে জানান দেয়, সে অবুঝ।
এত সবুজ, আমাকে দোলা দেয়,
ইট, সিমেন্টের বাড়ি হয়েছে, ‘গ্রিন হাউস’।
একদিন, এই টবে ফুল ফুটবে,
রঙিন পাপড়ি, সবুজের মাঝে।
আমিও বেড়ে উঠব তার সাথে,
সার্থক আমার ইচ্ছেকে মেলে দিয়ে।
আমার ‘গ্রিন হাউস’, সার্থক,
সম্পূর্নতা পাবে অবশেষে।
চারিদিকে, এত পরিবেশ দূষণ।
পারে না যেন, টবের গাছকে ছুঁতে।
বাজারে এসেছি প্রতিটা দিনের মত,
হাতে দুটি নাইলনের ব্যাগ।
একটা ব্যাগে চাল, আলু, পেঁয়াজ,
অন্য ব্যাগে, সবজি আর মাছ।
শেষ পর্যন্ত, পৌঁছতে গেলে ঠিক এইরকম,
নিত্যদিনের পরিশ্রম সাধ্য রুটিন।
একদিনে আশা, অন্যদিকে হিসেব,
দুইয়ে তাল মেলাতে, এত আয়োজন।
টবে রাখা গাছটি ডাকে আমায়,
এত চঞ্চলতা, সবুজে আছে ঘিরে।
আমার মধ্যে, একমুঠো ছড়িয়ে দিলে,
বাজার, পথঘাট, ক্লান্তি সব যাই ভুলে।
বিশ্বের যেখানেই যাইনা কেন,
তোর টানে, বারে, বারে ফিরে যাই,
ছোট্ট বাবুইপাখির বাসা এক!
একে আমি বল, কোথায় পাই?
এরপর, ধপধপ-এ ড্রেস পরে কর্মস্থলে,
অপরিচ্ছন্ন, অসুস্থ সমাজে,
যতনা নজর দিই, সেখানে,
জুতো, কোট, প্যান্ট, টাইয়ে।
ড্রেস দিয়ে ঢাকা রাখা হয়েছে,
ডাক্তারখানা, ইস্কুল, শপিংমল, অফিস।
কেউ যেন, ধরতে না পারে মুখকে,
প্রতিদিন নতুন জুতো আর পোশাক।
রাত নামলে, আঁধার এসে কড়া নাড়ে,
গাছটি তখনও মাথা দুলিয়ে যায়,
ফুল ফুটলে, তার কোথায় জায়গা হবে?
কেন বল, এত তুই হয়েছিস অবুঝ।
সেলফোন কাগজে মোড়া থাকবি কি,
কোনও বহুতল বাজারের রেকে,
রাস্তার পাশে, ফুলওয়ালির ছেঁড়া চটে, নাকি,
ঝরে পড়বি, এই টবের গাছ থেকে!