দু’হাত তুলে দোয়া মাঙ্গি

প্রিয়জনের সঙ্গে শেয়ার করুন :--👍

 136 total views

হারিয়ে গিয়েছে ছায়া, হৃদয়ে কেবল মায়া
হারিয়ে যাওয়া নক্ষত্রগুলো না এলে ধরাধামে –
আলো জ্বলতো না আমাদের গাঁও-গেরামে।
বলছি আমি তাদের কথা-
যাঁরা ছিলো পূর্বাঞ্চলের সজীব-সতেজ লতা।
মমতায় ভরা ছিলো বুক –
অন্যের সুখে খুঁজে নিতেন নিজেদের সুখ।
দীপ্তি ছড়িয়ে ছিলেন চারপাশ –
বেঁধে ছিলেন আশাহীনদের বুকে আশ।
ভেবেছিলেন তোরাব আলী সর্দার
এ-তো বড় গাঁয়ে একটি ঈদগাহ্ দরকার।
আগপাছ না ভেবে, জমির মায়া নাহি করে
ঈদগাহ বানিয়ে ভালোবাসা নিলেন ছিনিয়ে।
মনিন্দ্রের নাম শুনেছেন নিশ্চয়,
দিয়েছিল কচিকচি মুখের আশ্রয়
সবুজ ঘাসে ভরপুর এই বিস্তৃত মাঠ
বেঁধে দিলেন বিদ্যালয় বানিয়ে কচিমুখের ঘাট।
এই বিদ্যালয়ে শিক্ষা বিলিয়ে ছিলেন মোস্তফা স্যার
তাঁহার শিক্ষায় ছিলো অতুলনীয় বাহার।
মস্তু স্যারের বিলানো আলোয় যাঁরা হ’য়ে ছিলেন আলোকিত
আজ তারা ছড়াচ্ছেন আলো, দূর করছেন আঁধার কালো।
ও-ই যে চাকচিক্যময় উচ্চ বিদ্যালয়টি দ্যাখতে পাচ্ছেন
এমনিতেই মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়নি এখানে-
খোরশেদ আলম চেয়ারম্যান, জারু সর্দার, নায়েব আলী মেম্বার, কেরামত আলী সর্দার –
দা-কোঁদাল-হন্তি-শাবল হাতে ল’য়ে খুঁড়ে ছিলেন গর্ত
লাজকে সাজ বানিয়ে করেছিলেন কর্ম –
মানব সেবায় ছিলো যেন তাদের নৈতিক ধর্ম।
হাসেম ভাই হাতিম তায়ি ব’লে সর্বলোক
হৃদয় তার বিশাল দামী –
দিয়েছেন স্কুল-মসজিদের জমি।
কি বলবো ভাই তাদের কথা –
এলাকার প্রতিটি মানুষ-ই দাতা
বাঁশ-গাছ-ধান-চাল দিয়ে ছিলেন বিলিয়ে
কাজ করেছেন সেইদিন ধনী-গরীব, ছোট-বড় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে।
ভালোবাসার সুতোয় ছিলো বাঁধা
কেউ হতো কৃষ্ণ কেউবা আবার রাধা
একসাথে মোকাবেলা করতো ছোট-বড় সকল বাঁধা।
আমার আমিত্ব ছিলোনা মনে
হাসিমুখে কথা বলতো ছোট-বড় সকলের সনে
প্রতিষ্ঠানটির গাছ কাটতে ঘুরেছিলেন বনে-বনে।
নির্জনে মিমাংসা করেছেন কত-শত দ্বন্দ্ব –
হতে দেননি কভু প্রবন্ধ।
এমন মানুষের সাথে করছি বাস
কেড়ে নেই স্বপ্নের আশ
লাগিয়ে দ্বন্দ্ব, তৈরী করেন প্রবন্ধ কিংবা উপন্যাস
ডেকে আনেন দুর্বলের সর্বনাশ।
আজ মাথার উপর নেই ছাতা
বজ্রপাতের মতো ঝরে পড়ে বরই পাতা।
মিল-মহব্বত নেই অন্তরে –
সমাজের সিংহাসনে বসতে চায় মন্তরে।
আর আসবেনা ফিরে হারিয়ে যাওয়া রত্ন
যা রেখে গিয়েছেন মোদের তরে নিচ্ছি কি যত্ন?
অবহেলা অনাদরে ঘুমাচ্ছেন মৃত্তিকার ঘরে
গিয়ে দ্যাখেছি কি কভু তাদের বদ্ধ ঘরটি আছে কতোটা আদরণীয়?
তাদের শ্রমে খ্যাতি পেয়েছি, তাদের শ্রমে পেয়েছি যশ
তাদের তরে দু’হাত তুলে দোয়া মাঙ্গি পিলায় যেন জান্নাতের রস।

১৫/০৪/২০২২ সৌদি আরব

0

Publication author

0
মোঃ আকাইদ-উল-ইসলাম (মিটু সর্দার)। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত বড়মুড়া গ্রামে ১৯৮৭ সালের ১০ই নভেম্বর, এক সম্ভান্ত্রশালী মুসলিম পরিবারে কবির জন্ম। কবির পিতার নাম নূরুল ইসলাম (মাষ্টার) আর পিতামহের নাম আলতাব আলী সর্দার
Comments: 0Publics: 144Registration: 02-04-2022
প্রিয়জনের সঙ্গে শেয়ার করুন :--👍
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

পরিচিতি বাড়াতে একে অপরের লেখায় মন্তব্য করুন। আলাপের মাধ্যমে কবিরা সরাসরি নিজেদের মধ্যে কথা বলুন। (সহজেই কবিকল্পলতা প্রকাশনী ব্যাবহারের জন্য আমাদের এপ্লিকেশনটি ইন্সটল করে নিন)