মায়ের বলিরেখা – সুজন দেবনাথ
একটি মেয়ে যুদ্ধ করছেন সূর্যের সাথে, অল্প বয়স থেকে
সূর্যের সাথে কেউ জিততে পারে না, তিনিও পারেন নি।
তিনি জানতেন, হারবেন – তবু পথ ছাড়েন নি।
আমি সেই পথে পৃথিবীর সাথে পঁচিশটি সূর্য পার হয়ে
দেখি – তার মুখে অনেক যুদ্ধ-চিহ্ন, অনেক বলিরেখা।
মেয়েটি সূর্যের সাথে যুদ্ধ করেছেন, খুব অল্প বয়স থেকে
এই যোদ্ধা মেয়েটিকে আমি মা নামে ডাকি, জন্ম থেকে।
মায়ের মুখের বলিরেখা আমার ভালো লাগে না, আমি আমার
শৈশবের মাকে চাই। মাঝে মাঝে শৈশব ছুঁতে খুব ইচ্ছে করে,
আমি মায়ের বলিরেখায় হাত বুলাই, বলিরেখায় আমার শৈশব
খুঁজে পেলেও, আমার শৈশবের মা নাই। মায়ের বলিরেখা
আমার ভালো লাগে না, একদিন সূর্যকে বিশ্রী গালাগালি দেই।
সূর্য বলে, আমি নই, ওই সব বলিরেখা আসলে বানিয়েছিস তুই।
আমি মায়ের মুখের দিকে তাকাতে পারি না, মায়ের পেটের দিকে
তাকাতে পারি না – অপরাধী, চির-অপরাধী হয়ে রই।
মায়ের কোলে মাথা রাখতে আমার খুব ইচ্ছা হয়, কিন্তু
তার মুখের প্রতিটি বলিরেখা আমাকে আসামী করে দেয়,
মায়ের পেটের প্রতিটি দাগ আমাকে ফাঁসির রায় শুনায়।