রাধা, রাধা বা না থাকল
অতি মনোহর
আঁখি রূপে লাগে,
কি যে হবে আর
যেখানে যা থাকে।
এ পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ
আমি মনে, মনে,
সে বড় অহঙ্কার
রাখলাম যত্নে।
কি করে তবে দুধ
জলে থাকে মিশে,
দেখে লাগে এক
পাত্রের উপরে।
জানি, জানি তুমি
থাকো দূরে, দূরে,
তাই আমি থাকি
এত নিশ্চিন্তে।
একবার যদি
আসো আমার কাছে,
কি যে তবে করি
পারি’না ভাবতে।
বসতে দিই কোথায়?
ছোট্ট এই ঘরে,
পাই আমি কোথায়?
মনের মতন করে।
বলব তোমায় কি’যে
কথা বুঝি হারায়,
ওত রূপ দেখে
সে বুঝি পালায়।
রাঁজহাস হয়ে
দুধটুকু নেব নিঃশব্দে,
সে আনন্দ জাগবে
তোমার দেখা পেলে।
জানি রূপে, গুণে
তুমি ছাড়া নেই,
তাই দূরে, দূরে
নির্গুণে হারাই।
পাগল যদি’বা হই
একটু দেরী করে,
কৃষ্ণ ভাবিয়া তাই
সময় নিই চেয়ে।
তুমি কাছে এলে
নিশ্চয় মারিবে।
ওত রূপানলে
তুচ্ছ’তো বটে।
যদি তুমি পারো
আমাকে করো বাঁশি,
তোমায় ধরে থাকব
সর্বক্ষণ আমি।
কি যে করি শ্যাম
আমি বুঝি না’তো,
ধৈর্য্য, তোমার মতন
কোথায় যে পাবো?
রাধার ইহকাল
তুমি নিয়ে সাথে,
সারথি হ’ও আমার
নিয়ে যে’ও টেনে।
নির্গুণ, অরূপ
তোমার ছোঁয়া পেলে,
রূপ, গুণ সে পায়
পরশ পাথর কি তবে!
আমি বড় অভাগী
তাই হলাম রাধা,
ও শ্যাম, জানি’না আমি
কাছে ধরে রাখা।
রাখিতে সাধ হয়
কোথায় তবে পাই?
একটি মালা ফুলের
একা গেঁথে যাই।
একটি, একটি ফুলে
থাকে আমার জীবন,
বেশী ফুল নিলে
সাধ হয় তত।
শেষ হলে গাঁথা
গলায় পরি নিজে,
দুজনে এক হওয়া
সত্যি হল শেষে।
যদি ভালোবেসে
এসো একটি বার,
কি করে রাধা বাঁচে,
ভেবেছো কি তা’আর।
অজ্ঞান, অরূপ’কে তুমি
দিলে যদি এত,
কেন শান্ত তুমি
লিলায় মেতে ওঠ।
রাধার হৃদয়, কি আর
অত সহিতে পারে,
ভেসে যায় নদীজল
ধরি বা কি করে!
তবু যে শীতল হয়
জলের স্পর্শ পেলে,
রাধা তবে এবার
ডুবে’তো মরবে।
আহা কি শান্তি!
এ জীবন পেয়ে,
এমন করে ভাসি
চিন্তা না থাকে।
তুমিই জীবন
আর, তুমিই মরন,
কাজ কি আমার
রাধা, রাধা বা না থাকল!