শতাব্দীর পৌরাণিক ক্ষত
কাল সারা রাত বিষন্নতার রঙ—তুলিতে একাকী
এই নিঃসঙ্গ শয্যায় এঁকেছি তোমার অপ্রিয় মুখ
আমার অবিশ^স্ত পৃথিবী আমাকে সব বলে দিয়েছে
জেনেছি স্বার্থের সংঘাতে প্রিয়মুখ অপ্রিয় হয়ে যায়।
অকাল শ্রাবণের প্রবল বর্ষণে মুছে গেছে বাসন্তীস্বপ্ন
আজ যাপিত জীবনের কিছু কথা বলতে বড় সাধ জাগে
আমার ব্যক্তিগত অভিধানে বিশ্বাস বলে কোনো শব্দ নেই
কবিতার কিছু কোমল শব্দ, নির্মাণশৈলী আমায় পিছু টানে।
এই নির্জন আঙিনা, নিস্তব্ধ নিলয়, পুরনো পুস্তক পত্রিকা
ভাঙা—আর্শী, চিরুনি, চুলের গার্ডার কষ্টবাহী বনসাই ভূমি
ঘরের মেঝেতে যুগল শালিকের মতো চিৎ হয়ে শুয়ে থাকা
আহত অতীত, বিষন্ন বর্তমান, জংধরা জানালার গ্রীল গলে
গলে ভেতরে ঢুকে পড়া সোনালি রৌদ্ররশ্মি—হৃদয়ের উষ্ণতা
সব কিছুতেই দীর্ঘ—একাকিত্বের অন্তহীন গন্ধ লেগে আছে।
অথচ, প্রেমের বন্ধনে মায়াবী মুগ্ধতায় আমি তোমার কাছে
শুধু একটা ‘স্বপ্নিল জীবন’ চেয়েছিলাম যে জীবনে ভাবনারা
উৎসব মূখর রাতে ক্রমাগত স্বপ্নের মল্লিকা হয়ে ওঠে ফুটে
তুমি দ্বিধাহীনচিত্তে সেই চাওয়া—পাওয়ার বুকেপিঠে এঁকে দিয়েছো
শত শাব্দীর পৌরাণিক রক্ততিলক আর যত যন্ত্রণাময় ক্ষত।
প্রাণহীন পাথরের মূর্তির মতো নিশ্চুপ নীরবে সবই সয়েছি
পাহাড়ি ঝর্ণার কাছে এতদিনে জেনে গেছি কান্নার ব্যাকরণ
নিভৃতে কতটা পদাঘাত সইলে পাথর—হৃদয় ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়
সতত অশ্রম্ন—অভিধান পাঠে আমিও এ কথা জেনেছি বহুবার
তবুও নিষ্ঠুর নিয়তির কাছে কিছুতেই কখনও মানিনি পরাজয়।