সর্ববিজয়া: ইতিহাসে সনাতনী নারী
![]()
সর্ববিজয়া: ইতিহাসে সনাতনী নারী
কলমে- সুব্রত পন্ডিত
-+
অতল ইতিহাসের গর্ভে আজও জাগে গর্জন,
সেই নারীর- যার পদধ্বনি কাঁপায় শত সিংহাসন।
যখন অবমাননা ছুঁড়ে দেয় দিগন্তের প্রান্তরে,
তখনই নারী জ্বলে ওঠে বজ্র শিখার অন্তরে।
গৃহে নয়, গগনে যার রাজদণ্ড স্থির,
যার চক্ষে প্রজ্জ্বলিত অগ্নির তির।
যে নারী ঋষিকা অপলা- জ্ঞানবীণা হাতে,
সেই নারীই ভবশঙ্করী হয়ে ওঠে যুদ্ধের রথে।
আহা! ঝাঁসির ভূমি আজও ধ্বনিত তার নাম,
মনু থেকে লক্ষ্মীবাঈ, মহিমায় উদ্ভাসিত অবিরাম।
“আমি আমার ঝাঁসি দেব না”- গর্জনে ধ্বসেছে পর্বত,
রক্তে ভেসে উঠেছিল স্বাধীনতার প্রথম সঙ্গীত।
বাঁশবেড়িয়ার রায়বাঘিনী ভবশঙ্করী মহান,
আকবরও নত হয়েছিল তার দৃপ্ত প্রমাণ।
দস্যু পর্তুগিজ, মোঘল সেনা- সবাই পরাজয়ে ভৃত্য,
নারীর কৃপাণে জেগেছিল বীরত্বের প্রলয়নৃত্য।
দুর্গাবতী- গোন্ড রাজ্যের দীপ্ত সিংহাসনে,
অগ্নিশিখার মতো যোদ্ধা, মৃত্যুকেও যে তুচ্ছ মানে।
অমর ২৪ জুন, বলিদানের দিবস সেই,
যেখানে “পরাজয় নয়, মৃত্যু শ্রেয়তর হে”- নারীর বুলি এই।
তারাবাঈ! শিবাজীর স্বপ্নে অরুণোদয় জ্বালে বাঁকে বাঁকে,
আওরঙ্গজেবের মুঘল বাহিনী ভীত, তাঁর প্রলয়ে কাঁপে।
গেরিলা কৌশলে মারাঠা সেনা জয়লাভ করে,
তারাবাঈয়ের কৌশল আজও ইতিহাসে ঘোরে।
আর দক্ষিণে কিট্টুর নগরীর রাণী চেন্নাম্মা,
যে নারী রুখেছিল ল্যাপস নীতির দুর্ম্মদ যজ্ঞ।
ব্রিটিশ রেসিডেন্টের পড়েছিল রক্ত,
কর্ণাটকের আকাশে আজও নাচে দেশপ্রেমের ভক্ত।
হে সর্ববিজয়া নারী, হে শত্রুনাশিনী দেবী,
তোমার রূপে লীন প্রেরণা, শক্তি, ভক্তি, নমি স্নেহ অম্লানে।
বেদের মন্ত্রে, ত্রিশূলের ধ্বনিতে,
তোমারই নাম- প্রতিটি যুদ্ধে, প্রতিটি জীবনে।
যে বলে নারী দুর্বল- সে অন্ধ, সে মূর্খ,
কারণ নারীই তো সৃষ্টি, নারীই সংহার, নারীই দিগন্তের সূর্য।
তোমার অগ্নিতে জ্বলে ওঠে কাল,
তোমার মমতায় গলে যায় শোকের শৃঙ্খল।
প্রনাম সেই নারীকে- যিনি ইতিহাস, যিনি গাঁথা গীত,
যিনি প্রতিটি যুগে জাগান মানবতার প্রভাত।
তোমারই কণ্ঠে জাগে যুদ্ধের আহ্বান,
“জয় দেবী চণ্ডিকা”- পরিচয়ে, চিন্তনে চিরদিন মহান।
অটুট সর্ববিজয়া: ইতিহাসে সনাতনী নারীর মান সম্মান। প্রণাম।।
![কবিকল্পলতা প্রকাশনী [Kobikolpolota Prokasoni]](https://prokasoni.kobikolpolota.in/wp-content/uploads/2020/08/pro-nw-m-logo.png)