উৎসৃষ্ট
আমি আজ ভাতের প্লেটের উৎসৃষ্ট খাবারের মতো
প্রয়োজন মিটে নিষ্প্রয়োজন হয়ে গিয়েছি।
সূর্যের মতো আলো ছড়াতে পারিনা পরিবারে
বোঝা কাঁধে নিয়ে দাড়িয়ে থাকতে পারিনা বিদ্যুতের মজবুত খুঁটির মতো।
এই পৃথিবীতে বেঁচে আছি কি-না, না-কি নেই
সেই খোঁজ নেওয়ার জরুরৎ নেই কারোর।
সবাই যারযার মতো ব্যস্ত –
বিশাল দায়িত্ব তাদের উপর ন্যাস্ত
মরুর দেশে কেমন আছি খোঁজ নিতে ইচ্ছে হয়না কারোর।
উৎসৃষ্ট খাবার ডাস্টবিনে ফেলে আসার পর কেউ খোঁজ নেইনি
কুকুর-বিড়াল, ফুটপাতের শিশুগুলো চেটেপুটে মজা করে খায়।
আমিও আজ উৎসৃষ্ট খাবারের মতো
বেদনা গুলো চেটেপুটে খুব মজা করে খাচ্ছে আমার ভিতর।
যাঁর জন্য আমি চেঙ্গিস খানের সাম্রাজ্য সমতুল্য সাম্রাজ্য পদদলিত করতে পারি
সে-ও আজ আমার খোঁজ নেই না –
খেয়েছি,না-কি উপবাস আছি জিজ্ঞেস করে না।
আসলে পৃথিবীটা এমন-ই
সবাই স্বার্থসিদ্ধির পেছনে ছুটছে
কেউ মারছে আবার কেউ মরছে
কেউ পদদলিত করছে আবার কেউ পদদলিত হচ্ছে
কেউ হৃষ্টপুষ্ট হচ্ছে আবার কেউ হচ্ছে উৎসৃষ্ট।
আমিও জীবনের অন্তীম সায়াহ্নে এসে বাদামের খোসার মতো উৎসৃষ্ট হ’য়ে গেলাম
যৌবনের মতো পেশীতে আর শক্তি নেই —
ভক্তি নেই আপনজন, পাড়া-প্রতিবেশিদের হৃদয়ে।
আমার এই জীবনটা পরিত্যক্ত ডোবা কিংবা নর্দমার মতো
শেওলার স্তর পড়ে গিয়েছে জীবনের প্রতিটি সিঁড়িতে
স্বপ্ন দ্যাখতে নিজেরও ইচ্ছে নেই —
তাই কেউ এসে স্বপ্ন দেখায়না।