করোনাকালীন বন্দীদশা
আমি এখন কার্যত অনিচ্ছায় অবরুদ্ধ।
দুঃসময়ের পালকিতে চড়ে দিনাতিপাত আমার;
একাকিত্বের বিরামহীন যন্ত্রনাকাতর বন্দিদশা।
আমার ধৈর্যের সীমা ক্রমেই অতিক্রান্ত হচ্ছে।
প্রতি মুহুর্তেই বাড়ছে শঙ্কা, আশাহীন দুরাশা।
আমি শঙ্কিত, ভীত সন্ত্রস্ত এবং হতাশাগ্রস্থ।
আমার স্বজনদের কাছে ফিরে যেতে পারবো তো?
আমার সন্তান, প্রিয়তমা স্ত্রী, গর্ভধারিনী মা,
আমার ভাইবোন এবং অপরাপর সবার কাছে।
আমার ভাবনায় এখন ধূসর আগামী। মনে হয়
প্রিয়তমা স্ত্রী প্রহর গুনে গুনে
পার করছে অপেক্ষার পাথর সময়।
ছোট ছেলেটা প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি
পথ চেয়ে চেয়ে দিনশেষে ঘরে ফিরে বুকভরা হতাশায়-
যদি এক দৌড়ে আব্বুকে জড়িয়ে ধরতে পারতাম।
শয্যাশায়ী বৃদ্ধা মা হয়তোবা অবিরাম
সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করে যাচ্ছে
আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে।
বড় ছেলেটা ভীষণ চাপা স্বভাবের।
ওর কষ্টের পৃথিবী উল্টে গেলেও
কাউকে বুঝতে দিবেনা সে কষ্টে আছে।
আবার বেড়েছে দশ দিনের বন্দী দশার মেয়াদ।
আমার প্রাণ স্পন্দন বেড়েই চলেছে প্রতি ক্ষণের শঙ্কায়।
আমি বিস্মিত! কারণ –
আমি শৃঙ্খলিত নই
আমি পরাধীন নই
আমি পঙ্গুত্ব বরণ করিনি
আমি বাকহীন নই
আমি দৃষ্টিহীন নই
তবু আমি ঘর থেকে বেরুতে পারিনা।
আমার সামনে শুধুই নির্বিকার একাকিত্বের বন্দী বিলাস।
আমি পার করে যাচ্ছি অলস সময়।
আমার আশঙ্কার শঙ্কা এখন দুর্ভাবনা।
আবার ফিরে পাবোতো আমার মুক্ত জীবন?