টোকাই কঙ্কর ! –মোঃ রহমত আলী
টোকাই কঙ্কর !
‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐
মোঃ রহমত আলী
‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐‐
বামোন তার নাম, টোকানো
টুকিটাকি তার কাম।
ছালার একটি ছেঁড়া ব্যাগ,
হাতের ভরে ঘাড়ে ঝুলিয়ে চলে,
পথে-পথে চলতে-চলতে
টোকায় কাগজ আর হাড়ের টুকরা !
এমনই ভাবে এগিয়ে
ধীরে ধীরে ব্যস্ত ডাস্টবিনে
গিয়ে বসে, টুকাতে থাকে
বাছাই করে টাকা
একটু বেশি পাবে যাতে।
হঠাৎ করে আসলো
আবার পৌরসভার ট্রাক,
ধমক মেরে তাকে,
কেড়ে নিলো জোর করে
ব্যাগ সমিত কুড়ানো
তার সারা কঙ্কার,
ধাক্কা মেরে তাকে আর
ডাস্টবিনে ফেলে দিলে
পৌর মাতব্বার বললো
আবার গাল দিয়ে ডাস্টবিনে’ই
তুই পড়ে থাক রে !!
বামন আবার ক্ষিপ্ত হয়ে,
গায়ের ছেড়া গেঞ্জি খুলে
টুকাতে থাকে কেঁদে-কেঁদে
ছুটে যাওয়া কংকর,
গেঞ্জি আবার ভরে নিলো
সে ধীরে ধীরে টুকরো
কাঁচের টুকরায়, আচমকা
দেখলো সে আঙুল কেটে
তার ভীষণ ভাবে রক্ত ঝরছে !
তখন সে জলদি করে
ডাস্টবিন কাদা তুলে
আঙ্গুলে দিলো চেপে।
এবার বামোন চললো
আবার, বিক্রি করতে
টোকানো তার সম্পৎ ।
দোকানী এক তাকে ঠগীয়ে
দিল চুরি করা মাল বলে,
দামের চেয়েও কম দাম
দিলো তাকে, বললো আবার
রাগান্বিত স্বরে এ পথে যেন
তোকে আর কভু এই
পরিণতে না দেখি -রে ।
তবুও বামোন খুশি খুব
বেচারা লাঞ্ছিত হয়ে ও
পেলো যে কয় টাকা,
এবার সে উল্লাস মনে
সেখান হতে খরচ করিলে,
ভীষণ ক্ষুদায় বাধ্য হয়ে
দুই-টাকা আর-টাকা
কয়টি গুনিয়া গচ্ছিত
করে রাখিলে লুকাইয়া।
এবার বামন হঠাৎ সাঁঝে
একটু দেমার বোধ করে,
এভাবেই বে সাহারা সে
হাঁটিতে, হাঁটিতে, ষ্টেশন
লাইনের ওভার ব্রিজে
গিয়ে ওঠে , আর বসে একা
অসহায় ভাবে ঝিমাতে-
ঝিমাতে শেষে ঘুমায়ে পরে।
রাতে যখন সে আবার
অসুস্থ বোধ খুব করে
তখন সে তার রাখা,
সেই টাকা খুঁজে !
পায়না সে আর টাকা,
খুঁজে-খুঁজে হারিয়ে গেছে,
নয়তো চুরি করেছে কেউ।
তবে’ই বামোন ভীষণ পীড়ায়
বেসামাল হয়ে টোকানো
এক ঔষধ নিলো খেয়ে,
এবার যে আর সকালে
তার ঘুম নাহি ভাঙ্গে !!
‐‐‐‐‐০২‐০৮‐২০০৫‐‐‐‐‐