ধানমন্ডি ৩২
রাতের আঁধার ঘনালো সবে,
পাখিরা করেনি গান,
নিঝুম ভোরে পদধ্বনি!
ডরে হলো সব ম্লান।
গুলির শব্দে কাঁপছে বাড়ি,
কাঁপছে লোহার ফটক,
ডাকছে যেন দূর্ঘটনার-
পাপাত্মা সব ঘটক।
পৃথিবী যেন থমকে গেছে,
আতঙ্কে আর ভয়ে,
সাহসী মুজিব সিঁড়ি ভেঙ্গে-
নিচে এলো দ্রুত পায়ে।
সবাই যখন দিশেহারা-
মনোবল হলো পন্ড,
“আমি প্রেসিডেন্ট মুজিব”
ভেসে এলো অভয় কন্ঠ!
মুজিব যখন বদ্ধঘরে-
ভয়হীন যেন চাতক।
দোরের ওপারে কীসের ছায়া?
দাঁড়িয়ে ভীতু ঘাতক!
নিস্তব্ধ ঘোটা বাড়ি-
নেই আর কোন শব্দ,
অশুভ হুতুম ডাকছে যেন-
পুরো বাড়িটি জব্দ!
দোর খুললো! বেরুলো মুজিব!
ঘাতক ধরলো ঘিরে,
বজ্রকন্ঠে কাঁপলো দেয়াল,
ঘামলো ঘাতক ধীরে।
বিষাদ সিঁড়ি ভেঙ্গে ভেঙ্গে-
নামলো ঘাতক-বীর,
নির্ভীক যেন যোদ্ধা সে!
উন্নত তার শির!
“তোদের এতো সাহস!
আমাকে মারতে চাস?
যেখানে ঘৃণ্য পাকিস্তানি-
করতে পারে নি গ্রাস!
এই দেশ আমি ভালোবাসি,
ভালোবাসি এই জাতি,
এই দেশেই কীভাবে তোরা-
করবি আমার ক্ষতি?”
তখনি ডাকলো পাখির দল,
ভয়ার্ত প্রতিধ্বনি!
দেশ যেন হারালো অদ্য,
অমূল মানব মনি!
থমকে গেলো ধূলিকণা,
বাজলো স্টেনগান!
একবার নয়,দুবার নয়,
আঠারো তে গেলো প্রাণ!
ধপাস করে পড়লো মুজিব!
জাতে লাগলো খুঁত,
সিঁড়ি বেয়ে গড়িয়ে পড়লো-
তাজা রক্তের স্রোত!
এ যেন রক্ত নয়,
গড়িয়ে যাচ্ছে মুক্তি!
হারিয়ে যাচ্ছে রণবীর,
বাংলার অতুল শক্তি!
হারিয়ে যাচ্ছে হাজার যুগের-
শ্রেষ্ঠ বাঙালী!
হারিয়ে যাচ্ছে রাজনীতির-
মুক্ত কান্ডারী।
রক্তের স্রোতে বিবেক লুকোয়,
আপসোস হে জাতি,
যে তোরে হাঁটতে শেখালো-
মারলি তারেই লাথি!