বসন্তের অপেক্ষায়
বসন্তের অপেক্ষায়
-ভাস্কর পাল
গোটা কয়েক বছর আজ পেরিয়ে এসেছে খুবই দ্রুত।
বোঝার জন্য ছিল না তখন বোঝার আবেগ টুকুও,,
সেই বসন্তের হলদে ঝরা পাতার মাঝে বসেছিলাম
দোলনচাঁপা গাছের তলে এক পার্কের বেঞ্চিতে।
কুড়িয়ে পেয়েছিলাম সেই তল হতে পরে থাকা একটা পৃষ্ঠা
যা ছিঁড়ে পড়েছিল চারটে টুকরো হয়ে।
আবেগের বসে জড়ো করে মিলাতে থাকি
পাতার লাইন গুলো।
কেমন যেন ছন্দে ছন্দে ফুটে ওঠে পাতার টুকরোগুলো।
গাঢ় কালো হালকা টানে লেখা ছিল তাতে এক কবিতা।
কবির অক্ষর জ্ঞানে প্রকাশ পেয়েছিল সেই লেখিকার কথা,
সেই ছেড়া পাতায় বেঁধেছিল, এক বিরহের কবিতা।।
“আমাদের সব হলো, দেখা হলো, কথা হলো,
হলো স্বপ্ন দেখা,, কিন্তু একসাথে বসন্ত দেখা হলো না।
আসলো না কখনো আমাদের মাঝে পূর্ণ বসন্ত।।”
পড়তে পড়তে লাইন গুলো, ভাবিয়ে তুললো অনেক কিছু
বসন্ত যে প্রতি বছরই আসে,,
কিন্তু প্রতি বসন্তে আসেনা হৃদয়ে বসন্তের রেশটুকু।।
তার পরে বসন্তের শেষ কটা দিন এসেছিলাম,
সেই লেখিকার খোঁজে,,
দোলনচাঁপার তলে সেই ছেড়া পাতা হাতে।।
কিন্তু নিখোঁজ কবি খোঁজ দেয়নি আমায়,,
বসন্ত শেষে আবার গজায় নতুন কচি পাতা
তাদের থাকে কেবল হলদে হওয়ার অপেক্ষা।।
বসন্ত কাটে আরও একটি আসে, শেষ হয় সময়
এই ভাবে কেটে যায় কয়েকটা বছর।
কেটে যায় কয়কেটা ফেলে আসা বসন্ত।।
তবু নিখোঁজ কবির খোঁজ মেলে না।
প্রতি বসন্তের প্রতি দিনই আসি সেই দোলনচাঁপার তলে,,
বসে থাকি ঘন্টা কয়েক তার অপেক্ষাতে।।
অপেক্ষার হয়না শেষ, শেষ হয় বসন্তের,,
এই ভাবেই কেটে গেলো এগারোটা বসন্ত।।
বয়স হয়েছে দোলনচাঁপার, তার শরীরে নেই একটিও পাতা
তবুও বসন্তের চিহ্ন তার হৃদয়ে আঁকা।
প্রতি বসন্তের সাক্ষী এই দোলনচাঁপা।।
এই ভাবেই এলো গেলো কত বসন্ত,,
কেটে গেল একটি করে বছর,,
আমার জীবনে আসে না বসন্ত
যে বসন্ত, অপেক্ষার অবসান ঘটাবে।।
প্রতি বসন্তের মাঝে খুঁজে পাই না আমার বসন্তকে,,
খুঁজে পাই না সেই নিখোঁজ লেখিকাকে।
তাই আমি অপেক্ষায়,, আমার বসন্তের অপেক্ষায়।।