শরতের আগমনী …… সোনাঝরা রোদ নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা এসেছে শরৎ (চতুর্থ পর্ব)
শরতের আগমনী …… সোনাঝরা রোদ
নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা
এসেছে শরৎ (চতুর্থ পর্ব)
নীলাকাশে সাদা মেঘের ভেলা ভাসিয়ে বর্ষার আবরণের মধ্যে এসেছে শরৎ। বর্ষার বিষণ্ণতা পরিহার করে শরৎ এসেছে শান্ত স্নিগ্ধ কোমল রূপ নিয়ে রৌদ্র-মেঘের ছায়ার খেলা, ছড়িয়ে পড়া শিউলি ফুল, দুলতে থাকা কাশবনের সিগ্ধ কোমল রূপ নিয়ে সেজেছে প্রকৃতি। গাছে গাছে ফুটছে কাশফুল, বকফুল, শেফালি/শিউলি, গগণশিরীষ, ছাতিম, হিমঝুরি, মিনজিরি, পাখিফুল, পান্থপাদপসহ নানা জাতের ফুল। শেফালি, মালতী, কামিনী, জুঁই আর টগর মাথা উঁচিয়ে জানান দেয় সৌন্দর্য। মিষ্টি সুবাস ছড়িয়ে দেয় চার পাশে।
নদীর কিনার ঘেঁষে কাশগুচ্ছে মৃদু হাওয়ার দোলা। মাথার ওপর নীল আকাশে পেঁজা তুলোর মতো ভেসে বেড়ানো সাদা মেঘ কিংবা শিউলিতলায় ফুলের গল্পব্দমাখা স্নিগ্ধ ভোর— ইট-কংক্রিটের নাগরিক জীবনে শরতের এ রূপ দেখা এখন কল্পনায়ও আসে না। তারপরও প্রকৃতির নিয়মে ঝকঝকে নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা জানিয়ে দেয় শরৎ এসেছে। গ্রামাঞ্চল আর বহমান নদ-নদী পাড়জুড়ে সাদা কাশফুল তাই জানিয়ে দিচ্ছে, এসেছে শরৎ।
এই শরতে উদযাপিত হয় হিন্দুধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গোৎসব। মণ্ডপে মণ্ডপে বাজে ঢাক। সেই ঢাকের সাজ-সজ্জাতে ব্যবহৃত হয় কাশফুল। শীতের আগমনী বার্তা শুরু হয় এই শরতেই। শরতের শেষ দিকে ঘাসের ডগায় পড়তে থাকে শিশির বিন্দু। সূর্যের আলোয় শিশিরের বিন্দু মুক্তোর মতো ঝিকমিক করে।
বাংলা কবিতার আসরের সকল শ্রদ্ধেয় কবিগণকে জানাই শারদ-শুভেচ্ছা। বাংলা কবিতা-আসরের জয় হোক, বাংলা কবিতার জয় হোক, কবিদের জয় হোক। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু!
নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা
এসেছে শরৎ (চতুর্থ পর্ব)
শারদ প্রভাতে আজি ফুটিল কুসুমরাজি
সোনার অরুণ পূবে উঠে,
কাজলা দিঘির পাড়ে অশ্বত্থ গাছের আড়ে
ধারে ধারে কেয়াফুল ফুটে।
অজয় নদীর পারে কাশফুল ধারে ধারে
শরতের সাদামেঘ ভাসে,
বক বসে নদীচরে, ছোট পুঁটিমাছ ধরে
শালিকের দল উড়ে আসে।
শাল পিয়ালের বনে চেয়ে থাকি আনমনে
পাখি সব নাচে তরু শাখে,
অজয় নদীর বাঁকে তরীখানি বাঁধা থাকে
শালিকেরা নিত্য আসে ঝাঁকে।
ছল-ছল কল-কল বহে নদী অবিরল
শঙ্খচিলে ডাক দিয়ে যায়,
শরতের আগমনে ফুল ফুটে বনেবনে
দূরে কারা মাদল বাজায়।
দিঘিতে কমল ফুটে অলি তথা আসি জুটে
ফুলে মধু করে আহরণ,
ঢাকীর বাজায় ঢাক, ঘরে ঘরে বাজে শাঁখ
পূজার আনন্দে ভরে মন।