শুনিয়ে দিতাম গান ✑ মিটু সর্দার
বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে
প্রায় চার কিলোমিটার পথ যেতাম পায়ে হেঁটে
শিক্ষার আলোয় আলোকিত হবো ব’লে।
হুমায়ুন কবির বি.এস.সি স্যার
মতিগতি বুঝা ছিলো খুবই ভার।
একদম কাদামাটির মানুষ নিরলঙ্কার
দুরূহ অংক কষতেন নিখুঁতভাবে।
মুখটা থাকতো সর্বময় হাসোজ্জল
রাগলে হতো রক্তিম সূর্যের মতো লাল।
কানে শুনতেন কিছুটা কম-
পড়া না পাড়লে দেখাতেন দম
আঘাতের ‘পর আঘাত-
একাধারে পনেরো বিশ বেত্রাঘাত
খানিকটা দম নিয়ে আবার শুরু
পড়া না শিখলে এমনটাই দিবে গুরু।
যখন পড়াতে আসতেন বিজ্ঞান –
পড়া না শিখে-ও ঠোঁট নাড়িয়ে গুনগুনিয়ে –
শুনিয়ে দিতাম গান, কানে কিঞ্চিৎ শুনে ব’লে –
বেত্রাঘাত থেকে বেঁচে যেতো জান।
কতো আনন্দ হতো সেইদিন – ঠকিয়েছি স্যারকে
আমড়া কাঠের ঢেঁকি হ’য়ে বুঝি এখন
নিজে-ই নিজেকে ঠকিয়েছি তখন।
কুটিলতাহীন আটপৌরে ছিলেন ব’লে
অনেকেই মনে করতেন বোকা
উল্লোসিত হতেন অনেকেই –
আমার মতো গুনগুনিয়ে গান গেয়ে স্যার’কে দিয়ে ধোঁকা।
সেইদিন নিজেকেই নিজে দিয়েছিলাম ধোঁকা
বিবেকের বাঁধ আজ কটকটিয়ে কাটে পোকা।
শিক্ষা গুরুর পাঠদান, লাগতো চিপা-পড়তো টান
মনে হতো কানের কাছে ঢেঁকিতে ভানছে ধান।
ওরে তরুণের দল-
কর-বি যেমন কর্ম পাবি তেমন ফল
হওক ঝাল টক মিষ্টি কিংবা তেতো –
শিক্ষকের সাথে তৈরি করো সুসম্পর্কের সেতু।
পড়া নিয়ে দেখাও যদি অজুহাত
খুঁড়বে নিজের গর্ত নিজে –
শিক্ষাগুরুর কিচ্ছু হবেনা, গর্তে পড়বে নিজে।
সময় হারিয়ে থাবড়া-বে কপাল
দ্যাখে-যা দ্যাখে-যা ওরে গোপাল
সময়ের কাজ করিনি সময়ে –
সবগুলো আজ ধাওয়া দিচ্ছে এসে অসময়ে।
২৬/০৫/২০২২ সৌদি আরব