শেষবেলায়
এখানে তুমি নেই
ছমাস হয়ে গেল ছেলের এই তিন কামরার ফ্ল্যাটে
না কোন উষ্ণ স্পর্শের অনুভূতি
পেছনে ধীর পায়ে চলাফেরার শব্দ
কিংবা এক ঝটকা হিমেল বাতাসে চোখের পাতা বন্ধ হওয়ার আবেশ
তুমি এখানে নেই
ওখানে ছিলে
পুরনো বাড়িটায় তোমার স্মৃতিই ছড়িয়ে থাকতো সর্বত্র
উঠোনে ঘাস বড় হয়েছে, বেড়াল ছানাটাও আর ছোট নেই একেবারে
সারাদিন ওখানেই লাফালাফি করতো
যেটাকে তুমি ছোট বাটিতে করে দুধ খাওয়াতে
কোন কোন দিন
পেয়ারা গাছটার দিকে এগিয়ে যেতে তুমি, নির্দ্বিধায়
টিয়া পাখির ঝাঁক এসে বসে, পাকা ফলে ঠোকর দিত
তোমাকে চিনতো ওরা
ভয় পেয়ে উড়ে চলে যেত না
যে ফ্রক পড়া মেয়েটা ভোরবেলা টগর ফুল তুলতে আসতো
প্রতিদিন
শেষ দিনও দেখেছিলাম তাকে
ফুল তুলতে তুলতে এদিকেই দেখছিল
হয়তো তোমাকেই খুঁজছিল
দশ তলার এই ফ্ল্যাটে কখনও কখনও চোখ বন্ধ করে,
আমি ও-বাড়ির বারান্দার চেয়ারটা টেনে বসি
তোমার সাথে কথা বলি গল্প করি
কখনও বা দুজনে হাঁটি পাশাপাশি, বড় ঘরটার কোনাকুনি
যেমন ওখানে করতাম
দেখো, একদিন হঠাৎই ঠিক চলে যাবো তোমার কাছে
দেখে তুমি অবাক হবে
ঝলমল করে উঠবে আমার অপ্রত্যাশিত আগমনে
খুশিতে চোখ থেকে জল ঝরবে দুজনেরই
ভগবানের কাছে প্রতিনিয়ত এই প্রার্থনাই করে চলেছি
যেন খুব তাড়াতাড়ি নিয়ে যায় তোমার কাছে….
চির-নিরুদ্দেশে ।।