সর্বভূতেষু নারী
কবিতা : সর্বভূতেষু নারী
আমি সেই নারী…..
পৃথিবীর স্থিতি-তাল-লয় যুগান্তর সৃষ্টিকারী
ত্রিশক্তি থেকে যার উৎপত্তি স্বর্গ সুরের আহ্বানে
রক্তবীজ পান করে কালিকা দেবী চণ্ডিকা মহাবিদ্যার দশাবতাকারী।
আমি সেই নারী চতুর্যুগের তন্বী
দশ হাতে যার ত্রিভুবন বিশ্বপ্রকৃতি চালান যিনি
গর্ভধারণ থেকে পরিত্রাণ জীব চক্র মায়ায়
সমকালান্তে দিন-সকাল এসব আমার ই কৃত জীব-প্রাণী।
আমি সেই তোমাদের কন্যাকুমারী দামিনী
পূজারী বেশে যাকে পূজা করেন মাতৃরূপেণ সংস্থিতা
আবার তাকেই নির্জন রাস্তায়-ঝুপড়ি থেকে চা বাগানে
ধর্ষণ করেন রক্তাক্ত জরায় ধর্ষিতা কাম শিকারির কামিনী।
কখনো মায়ায় প্রেমের জালে জড়ানো কৃষ্ণা
আবার কখনো বা সুনীল চোখের ভূষিতা নীরা
বিবাহযোগ্য কন্যা পরমা হয় রবি ঠাকুরের পনদানের নিরুপমা।
দগ্ধ-দগ্ধে জ্বলে ওঠা আধপোড়া মেয়েটা কামক্রোধের তৃষ্ণা।
আবার আমি সেই নারী…..
মহাকাশে ভেসে বেড়ানো কল্পনা দুর্গম পর্বতরোহীনি স্বপ্না
স্হল- জল-অন্তরীক্ষ চিরে অনাবিল চিত্তে
ট্রামে-বাসে চেপে সংসার চালানো প্রতিদিনের সওয়ারি।
আমি সেই নারী বিশ্বসংসারের অনন্যা
সর্বসুখ ত্যাগে বুকে করে রক্ষা করেন যিনি জননী
পতি দেবতার পায়ে নিজেকে সমর্পিত করেন তিনি স্ত্রী শয্যাসিনী
আবার সংসার বাঁচানোর তাগিদে রাস্তায় নামে ভগিনী আদুরে কন্যা।
নারী সুন্দরী গার্গী অপলা তবে অবলা নয়
নারী মায়াহরিণী সুনয়নী কিন্তু সুখসিনা কামিনী নয়
নারী জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ করে সুকর্মঠ যোগিনী
অদম্য সাহসে ভর করে কালজয়ী বীরঙ্গনা দুর্গেশ নন্দিনী।
অয়ি গিরি নন্দিনী নন্দিত মেদিনী
বিশ্ব বিনোদিনী নন্দনুতে
গিরি বর বিন্ধ শিরোধিনি বাসিনি
বিষ্ণু বিলাসিনী জিষ্ণুনুতে
ভগবতী হে শিতিকণ্ঠকুটুম্ববিনি
ভূবি কুটুম্বিনি ভূরিকৃতে
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী
রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে।।