এক সন্ধ্যার গল্পকথা
এক সন্ধ্যার গল্পকথা /
কোয়েল তালুকদার
তুমি আজ কোথায় কোন্ রোদ্দুরে হলুদ সোনাল ফুলের সুবাস ছড়াচ্ছ, কোন্ দিগন্তে মেলেছ গাংচিলের ডানা, ভাসছ কলমিলতা হয়ে কোন্ জলবতী নদীর জলে।
আমি তোমাকে খুঁজি সজিনা ফুলের গন্ধে, ডুমুরের সাদা রেণুতে, দোয়েলের পালকের নীচে কুসুমপুরের ভাঁটফুলের ঝাড়ে, আকন্দের হরিৎ পাতায়, মহুয়া ফুলের পাহাড়ের ঢালে –
কিন্তু তুমি যে চলে গেছ দ্বিধাহীন ভঙ্গিতে অনেক দূর!
যেখানে গেছ সেখান থেকে আসবে না তুমি আর, জানালা খুলে দেখতে পাই ধূ-ধূ বালিয়াড়ি, মিছেই জলস্রোত ধারা, হাহাকার করা আকাশের মেঘ, আর কেবল নিঃসীম শূন্যতা…
তোমার বাড়িটি দেখলাম কাছে থেকে, কবেকার একটি ভাঙা গরুর গাড়ির জীর্ণ চাকাগুলো পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে আঙিনায়, কোথাও কোনও শব্দ নেই, বাতাস নেই, পাখি নেই, ছবি নেই, কোনও গল্প নেই…
একটি বালিকাকে দেখলাম, তার ফ্রকের কোচে
বকুল ফুল, খুঁজছে সুতো, হয়ত গাঁথবে মালা,
দেখলাম ওর ভিতর আমার ছেলেবেলা,
মনে পড়ল কবে এক মেঘবালিকা সন্ধ্যার ম্লান আলোয় দিয়েছিল আমাকে একগাদা গাঁদাফুল…
পুরনো পদরেখাগুলো খুঁজছিলাম, সব চিহ্ন
মিশে গেছে ধুলোয়, চোখ দুটো আচানক আদ্র হয়ে উঠল, পথে ফিরতে ফিরতে মনে হলো –
কিছু নাহোক আজ এই সন্ধ্যার বেদনার রেশটুকু দিয়ে তোমাকে নিয়ে একটি গল্প তো লিখতে পারি!