একটি গ্রামের স্কেচ – ভাইধন বন্দে আলী-কে নিবেদিত
খরা, বন্যা আর ঝড়ের নাচনে ক্ষয়ে ক্ষয়ে যাওয়া বুজুং
গ্রামের স্বজনেরা তোমরা আজ কেমন আছো?
বুজুঙের মানুষেরা শোন!
হাড়-পুকুরের সেই তেঁতুলতলায় এখনও কী তেঁতুল
বিছিয়ে থাকে? এখনও কী বুড়ো তেঁতুলের শিকড়ে
উদাসীন এক কিশোর ছিপ ফেলে বসে থাকে?
রঙ-সাগরের জলে কী এখনও মুখ চিনে নেয়া যায়?
এখনও কী শাপলা ফুল ফোটে? আর শালুক তুলতে সাঁওতাল
কিশোরীর হাত পাঁকে ডুবে যায়!
আচ্ছা, বেলডাঙায় কী এখনও ভূতের ভয় আছে? আর ওই
আমাদের বড় বাগানের ঝোপে কী এখনও অনায়াসে কিশোর
কিশোরীরা নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে যেতে পারে?
আমাদের বরজের ধারটা এখন কেমন আছে? এখন তো আর
ওখানে বাঘ-টাগ থাকে না, শেয়াল-টেয়াল আছে, না?
আর বারুইদের অবস্থা এখন কেমন? ওরা কী এখনও বেঁচে-বর্তে
পান চিবোয়? লাগর পুকুর, শিব-পুকুরের সেই অসম্ভব
তাল-খেঁজুরের জঙ্গল কী তেমনই আছে?
পুরনো পুকুরের পাড়ে এখনও কী রমণীরা নিশ্চিন্তে প্রাতঃক্রিয়া
সান্ধ্যক্রিয়া করতে পারে? ওর জলে এখনও কি বুক ডুবিয়ে
ওরা পরপুরুষের প্রেমের কথায় মত্ত থাকে!
বড় মাস্টারের হাতে পোঁতা পুলের ধারে
সাজানো বাবলা গাছগুলিতে কী
এখনও থকথকে আঠা জমে? হলুদ হলুদ
ফুল ফোটে?