প্রিয়জনের সঙ্গে শেয়ার করুন :--👍

Loading

তখন বুঝিবা রাত্রি গহন,

বড়ই অধীর দুটি ভাইবোন,

ঘুম নেই কারও চোখে

 

কি হল এখনও ঘুমাওনি কেনো !

এগারোটা কবে বেজে গেছে জানো !

মা এসে বকেঝকে

 

লেপের ভিতর ছোটো দুটি প্রাণ,

করে যেন কত তন্দ্রার ভান,

মিটিমিটি হাসি মুখে

 

আসবে যে বাবা কাল ভোরভোর,

দেখাতহয়নি একটি বছর,

মন তাই হাসে সুখে।

 

নীল দিগন্তে রবির কিরণ,

আঙিনার মাঝে মধুর কূজন,

খোকাখুকু বিছানায়

 

ঘড়ির কাঁটাটি ঘুরে ঘুরে ফেরে,

সাত, আট, নয় , দশটার ঘরে,

বাবা আসেনা হায়।

 

একদিন যায় দুদিন যায়,

বসে থাকে দোঁহে বাবার আশায়,

সদরের ঠিক সমুখে।

 

কচি কচি মুখে প্রশ্নের ঝুরি,

কেন যে বাবাটা করে এত দেরী,

কবে এসে নেবে বুকে

 

অবশেষে বাবা আঙিনার পরে,

পতাকাতে পুরো দেহখানি মুড়ে,

কফিনের মাঝে বন্দী

 

শুধায় সবারে দুই শিশুমন,

কেন গো বন্ধ বাবার নয়ন !

কোন দুষ্টফন্দী !

 

গেহকোণে মা বুঝি জ্ঞানহীন,

অশ্রুধারাটি অন্তবিহীন,

চৌদিকে শোকচিত্র –

 

বৃদ্ধা ঠাকুমা সন্তানহারা,

কিই বা করেন হাহাকার ছাড়া

শহীদ যে তাঁর পুত্র।

 

হতবাক দুই অসহায় শিশু,

অপূজিত আজি গেহমাতা টুসু

বুঝিতে যে কিছু নারে –

 

ঘুমন্ত বাবা ঘরের দুয়ারে,

নেয়নিতআজি ক্রোড়ের মাঝারে

ডাকেনিতনাম ধরে

 

বাবা যে তাদের হারায়েছে তান,

দেশের জন্য প্রাণ বলিদান,

কথা সে কবে না আর –

 

দেশমাতৃকা রক্ষার তরে,

তেরঙা পতাকা লয়েছে সে শিরে,

মৃত্যুই উপহার।

 

মর্মস্তুদ এহেন ঘটনা,

নয় জেনো এটি কোনোই রটনা,

স্বদেশেরই এক গ্রাম –

 

তবে ঘটনাটি নয় অবিচ্ছিন্ন,

একই দৃশ্য স্থানটি ভিন্ন,

সেনারা দিচ্ছে দাম।

 

হানাহানি আর দ্বেষবিদ্বেষ,

কলহে মত্ত পাশাপাশি দেশ,

কার আছে বেশী শক্তি-

 

তর্কের রেশ অনুষ্ণ ঘরে,

উষ্ম কথায় তিক্ততা বাড়ে,

ধন্য দেশভক্তি।

 

আর সেনাদের বাস হিমবাহ পরে,

দেশরক্ষায় সংগ্রাম করে,

প্রাণ লয়ে ছিনিমিনি

 

কত পরিবারে নাহি যে সাহারা,

শিশুরা অনাথ,স্ত্রী স্বামীহারা,

পুত্র হারান জননী।

 

তাদের খবর কজনই বা রাখে !

অশ্রু কি ঝরে সেনাদের শোকে !

মোদের স্বার্থবেশ

 

চারিদিক এই প্রাচুর্য্য মাঝে,

সকলে ব্যস্ত নিজ নিজ কাজে,

বিচিত্র এই দেশ।

 

এইবার ফিরি সেই ছোট গ্রামে,

দিবসেও বুঝি ঘনাঁধার নামে,

শিশুদুটি অসহায়-

 

বাবাকে হারায়ে ভুলে গেছে হাসি,

মিলায়ে গিয়েছে জীবনের খুশী,

কে বা বহে তার দায় !

—————————————-

0

Publication author

1
একটি বহুজাতিক সংস্থায় প্রবন্ধক পদে কর্মরত ছিলাম। ২০১৭ সালে ৬০ বছর বয়সে অবসর নিয়েছি । এখন কবিতা ও গল্প লেখা আমার অবসরের সাথী।
Comments: 0Publics: 25Registration: 26-08-2020
প্রিয়জনের সঙ্গে শেয়ার করুন :--👍
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

পরিচিতি বাড়াতে একে অপরের লেখায় মন্তব্য করুন। আলাপের মাধ্যমে কবিরা সরাসরি নিজেদের মধ্যে কথা বলুন। জমিয়ে তুলুন কবিতার আড্ডা।