স্বাধীনতা দিয়েছে দায়িত্ব
![]()
স্বাধীনতা দিয়েছে দায়িত্ব
কলমে- সুব্রত পণ্ডিত
-+
স্বাধীনতার মানে হলো- নিজের ইচ্ছা ও বিবেক অনুযায়ী জীবন যাপন করার অধিকার,
যেখানে অন্য কারও অবাঞ্ছিত নিয়ন্ত্রণ, শোষণ বা দাসত্ব নেই। শুধু আমিই আমার।
এটা দুইভাবে বোঝা যায়-
এক- ব্যক্তিগত স্বাধীনতা-
নিজের মত করে চিন্তা করা, কথা বলা, বিশ্বাস রাখা, কাজ করা এবং জীবনযাপন করার অধিকার।
দুই- জাতীয় স্বাধীনতা-
একটি দেশ বা জাতি নিজের আইন, শাসনব্যবস্থা ও সিদ্ধান্ত নিজে নেওয়ার অধিকার,
বাইরের শক্তির অধীন না থাকার দৃষ্টি পরিষ্কার।
তবে, স্বাধীনতা মানে ইচ্ছামতো যা খুশি করা নয়-
এর সাথে দায়িত্ব আর অন্যের স্বাধীনতার প্রতি সম্মানও জড়িত।
এই বিষয়ে একটা ছোট্ট গল্প শোন।
গল্পের নাম: “পতাকার নীচে”
গাঁয়ের শেষ প্রান্তে এক বুড়ো মানুষ থাকতেন নাম সুব্রত পন্ডিত।
মাথায় সাদা চুল, চোখে শান্তির দীপ্তি।
গ্রামের ছেলেমেয়েরা তাঁকে “দাদু” বলে ডাকত।
একদিন ১৫ই আগস্টের সকালে,
স্কুলের মাঠে পতাকা উত্তোলনের আগে ছোট্ট শোভন এসে জিজ্ঞেস করল,
— “দাদু, স্বাধীনতার মানে কী?”
দাদু একটু হেসে বললেন,
— “তুই কি মনে করিস স্বাধীনতা মানে যা খুশি তাই করা?”
শোভন মাথা নাড়ল, আলতো আলতো সুরে বলল
— “হয়তো… হবে”
দাদু আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,
“যেদিন আমি তোমার মতো ছোট ছিলাম,
তখন এই আকাশটা আমাদের ছিল না,
এই মাটিতে হাঁটতেও অনুমতি নিতে হতো।
স্বাধীনতা এসেছে অনেক রক্ত, কান্না আর ত্যাগের বিনিময়ে।”
কথাটি ভুলতে পারিনা।
মাটিতে পড়ে থাকা একটা শুকনো পাতা তুলে নিলেন দাদু আর বনলেন,
“দেখ, এই পাতাটি গাছ থেকে আলাদা হয়েছে, কিন্তু এখন সে স্বাধীন নয়–
কারণ তার নিজের বাঁচার শক্তি নেই।
ঠিক তেমনই,
স্বাধীনতা মানে শুধু বাঁধন ছাড়া নয়-
নিজেকে টিকিয়ে রাখা, গড়ে তোলা,
আর অন্যের স্বাধীনতাকে সম্মান দেওয়া-
নির্মল বাতাসে দোলা।”
পাশের মাঠে তখন জাতীয় পতাকা উড়ছিল,
শোভন নীরবে দাদুর হাত ধরে বলল,
“আমি বুঝেছি, দাদু। স্বাধীনতা মানে দায়িত্বও।”
সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীতটি উচ্চারিত হচ্ছিল
সঙ্গে বাঁশির সুর খুব সুন্দর,
“জন-গণ-মন-অধিনায়ক জয় হে” পাক চিরস্থায়িত্ব।
দাদুর চোখে চিকচিক জল, মূল্যবান,
“হ্যাঁ, এই পতাকার নীচে আমরা সবাই সমান,
আর সবাই দায়িত্ববান।”—
![কবিকল্পলতা প্রকাশনী [Kobikolpolota Prokasoni]](https://prokasoni.kobikolpolota.in/wp-content/uploads/2020/08/pro-nw-m-logo.png)