আমাকে ফিরে না পেলে
আমাকে ফিরে না পেলে
তুমি কেমন যেন একটা হয়ে যাও
ঠিক উন্মাদ নয়
উত্তেজিত নয়
যেন জলের তৃষ্ণা কাতর এক চাতক
বই পিঠে আমরা ঘুরেছি বহুবার
সাদা কালো ড্রেসে স্কুল ইউনিফর্ম
তোমার চুলে থাকত লাল সাদা নীল ফিতা
আর মুখে এই এখন যে হাসিটা সাজালে
ঠিক এমনই একটা হাসি
ক্যানিং এর লর্ড ক্যানিং এর বাড়ি নিয়ে তোমার ছিল ঘোর আপত্তি
সেখানে যে বুড়িটা এখনও আছে
সে যে তার বংশধর তা তুমি কখনই মাননি
তাতেও ঘোর আপত্তি করেছ বহুবার বিচারক হয়ে
কিংবা বেলঘড়িয়ার সে ঘুমন্ত বাড়ি গুলো
ব্যারাক পুরের অর্ধ নগ্ন ফসিলের মত পড়ে থাকা রঙ্গালয় ! চিত পুরের নারী ভবন !
যাদের তুমি বলতে ইংরেজদের পাপের চিহ্ন
রানাঘাটের মালিপোঁথায় এক ঘুমন্ত বাড়ির রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে
সেদিন গিয়েছিলাম অনেক ভেতরে মাটির নিচে
সে অন্ধকার পুরির শীকরে ,একা ,একাই
দুজনে পথ হারিয়ে চোরা গলিতে
কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞান হারালে,আমাকে না পেয়ে ।
আমি হলাম উদ্ভ্রান্ত
শেষে আমাকে পেয়ে …
আমাকে পেয়ে জড়িয়ে ধরলে বুকের ভেতর
বোধ হয় ওই বুকেও যদি একটা গুহা থাকত ….
একবার বাসের ভেতর ভুল মেয়েলি কেসে অ্যারেস্ট হলে
যেভাবে তুমি কেঁদেছ থানার চেয়ারে
আমি শুধু তোমার দিকে চেয়ে
যদি আমি সেটা সত্যি করতাম তবে তোমার কি হতো
তুমি শুধু ধরনি বড় বাবুর পা
বাকি সবই… সবই করেছ
ফোন করেছ চন্দন নগরের মিতালিকে
বেঞ্চে বসে মাথায় হাত রেখেছো
চেয়ারে বসে কেঁদেছ
বারান্দাটায় পাক খেয়েছ না হলেও পনের বার
রাত একটায় ফোন করেছ কলেজের রতনকে
আর রাত তিনটেয় চোখ ভেজাতে ভেজাতে
শ্রান্ত হয়েছো বড়ো বাবুর চেয়ারের পাশে
কারণ তুমি শুনেছ
সকালে কোটে চালান
আমাকে ফিরে না পেলে তোমার একসাথে বাসে ওঠাটা আর হবে না
আমাকে ফিরে না পেলে কলেজ ক্যাম্পাসে
কলেজ ক্যান্টিনে কফির উষ্ণতা থাকবে না
আমাকে ফিরে না পেলে ফেড়ি ঘাটের ঢেউ
চোখে আসবে না আর
লঞ্জ গুলো ঘুমিয়ে যাবে , ঘুমন্ত বাড়ি গুলো পচতে পচতে ছড়াবে ঘৃণা
আরও যা যা হবে তা আমায় ফিরে না পাওয়ার কারণ ।
আমাকে ফিরে না পেলে এই লঞ্চে এই বেঞ্চে থাকতো অন্য কোনো দুজন
আজ যে হাসিটা সাজালে, যে হাসিটা মুছলে রুমালে
বোধ হয় এত সুন্দর্য প্রকৃতিরও নেই
বিধাতা আর কাউকে দেবে না এত সুন্দর্য
এই রূপ ,এই মুখ ,লালচে এই নাক,এই ঠোঁট
বিধাতা আর কাউকে দেবে না।