পল্লীর কবি আমি
পল্লীর কবি আমি –
আপনার চেয়ে আপনের মান মননে অনেক দামী!
মানুষের মাঝে খুঁজি ফিরি যতো স্বপ্ন আশার ধন,
শ্রদ্ধা ও স্নেহ এ পথে আমার অদৃশ্য গুরুজন।
বাউল গানের সুধা-সুরে সঁপে ভুখা উদরের পুঁজি,
রঙিলা নায়ের পাকা মাঝি সেজে নিশি-দিন তারে খুঁজি।
মেঘের আড়ালে চুপিসারে ঢেলে ছেঁড়া-ফাটা আনচান,
পথে পথে ঘুরি ঝোলায় সাজায়ে সবুজ মাঠের প্রাণ।
রাঙা প্রভাতের আলো –
পাখালির ডাকে সযতনে কাড়ে হতাশার ভীরু কালো।
প্রখর রৌদ্র পোড়া গায়ে মেখে তরু তলে তুলে বাড়ি,
ভেজা ঘাসে বসে তৃপ্তিতে দেখি শকুনের আহাজারি।
কাজলা বিনের খলবলে মাছ জড়ায়ে ধরে এ বুকে,
গড়াগড়ি করি মনের হরষে কাদা মাটি শুঁকে শুঁকে।
গো-ছাগ চাইলে পাকুড়ের ঘাড়ে বেঁধে গোধূলির বেলা,
চারণ ভূমিতে মিলে মিশে গড়ি বাঁশরীর সুরে খেলা।
চন্দ্র হৃদয়ে মাতি –
যেচে লিখে দেয় দুখিনী মায়ের পিদিমের সুখ্যাতি।
শিয়ালের হাঁকে জেগে উঠে বলে বুনো মশকের জ্বালা,
ঝোপের বন্দে সহজেই মিলে ঝিঁঝিঁ জোনাকির পালা।
গ্রাম গঞ্জের লোকগীতি আর নকশি কাঁথার সুর,
শ্যামল বগলে খেরো খাতা নিয়ে রোজই করে ঘুর ঘুর।
পালা বদলের মনোহরা রূপে অবিরাম আমি হাসি,
পল্লীর কবি খরা জল খুবই ডলে-মুছে ভালোবাসি।