পাগলা নারু– অসীম চক্রবর্ত্তী
ছিল পরিচয়, উঁচু জাত কয়, আপনার ভিটেমাটি
আজ কিছু নেই, পরিচয় সেই, সমাজের এক খাঁটি
না পেয়ে বেতন, পায়না যতন, তবু না চেতন আসে
মুখ বুঝে সয়ে কিছুনা কয়ে, ফোকলা দাঁতে সে হাসে।
একটাই দোষ নেই আফসোস, চাই দুই পেগ শুধু রাতে
কে আছে খোঁজ এ কাজেও রোজ, কে আছে তারই সাথে
অলিতে গলিতে, অকাঠ্য গালিতে কহে যে পাগলা নারু
পাথর ছুড়িয়া, জটলা করিয়া, খাবি নাকি বলে দারু।
তবু দিন সাজে, মানুষের কাজে, কেও যদি নয় সুস্থ
পরিজনহীন নারু সারাদিন হোক না সে খুব দুস্ত
রুগি যে ভর্ত্তি, একা যে ব্যক্তি রাত্রে পাশেতে কে?
একা সে কুম্ভ, দাঁড়িয়ে স্তম্ভ, ভরসা যোগায় যে।
দুস্ত যে ভারী, অবলা সে নারী, অসহায় বোধে তারে
দুবেলা দাড়িয়ে বিবাহের কাজ, এক হাতে সব সারে
যদি পায় খোঁজ শবদাহ ভোজ এ কাজে ওই সেরা
হরিবোল যব, খই মালা শব, যেন শ্মশানই ওর ডেরা।
একদিন সেই, চারদিকে যেই মহামারী দিল দেখা
মনে শুধু ভয়, ঘরে বসে রয়, চারিদিক শুধু ফাঁকা
কারো হলে রোগ, নেই কোন লোক, শুধু আছে নারু কাছে
নিশিদিন ধরে, মানুষের তরে, তাহাদের সদা পাশে।
কেউ পাশে নেই, ব্যাধি হল যেই, তাহারই দেহ পরে
গায়ে খুব জ্বর, কাশে দিনভর, অবশেষে গেল মরে।
শহীদের প্রাণ, দিয়ে বলিদান, মানুষই নিল বুঝি কেড়ে
সত্য হে বীর, করি নতশির, শিখলাম যবে গেলে ছেড়ে।