সকলে মোরা সকলের তরে
লিয়াকত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন যাঁরা
খুঁজছি আমি তাদের আজ হ’য়ে পাগলপারা।
পরিবারের মতো ছিলাম মোরা একসাথে
জীবিকার তাগিদে আজ দূর হতে বহুদূর।
মুখে ছিটিয়েছি মধু, ঝগড়াঝাটি হয়নি কভু
মিলেমিশে থেকে সময় কাটিয়েছি মৌচাকে।
অন্যের ব্যাথায় হতাম ব্যাথিত, সুখে প্রফুল্লিত
গঙ্গা জলের মতো চোখের পলকে চলে গেলো সময়।
পিতার পরে যার স্থান — শিক্ষাগুরু মহান
শাসনের সময় করে শাসন —
কাছে টেনে দিয়েছেন সন্তানের আসন
হাসি মুখে ব’লে কথা, তাড়িয়ে দিয়েছেন মনের ব্যাথা
এমন শিক্ষাগুরু মিলবে না’ক যথাতথা।
হৃদয়ে গুঁজে মনুষ্যত্বের বীজ
ছিটাইতে ব’লেছেন ভালোবাসার ফিনকি
চমকে ঝলকে উঠবে জেগে
হাজারো মানুষ পথ খুঁজে নিবে ঝলকানিতে।
এমন শিক্ষাগুরু মৃত্যুর সঙ্গে পড়ছে পাঞ্জা
আজ কোথায় শিক্ষাগুরুর হাজারো ঝাণ্ডা?
নিজের যশ,খ্যাতি, প্রসিদ্ধের তরে ছুটছে সবাই
কেউ গাইনা বাবার সমতুল্য শিক্ষাগুরুর সাফাই।
আমি অধম, পথভ্রষ্ট নরাধম —
ছিনিয়ে আনবো তোমায়, যমের বুকে রেখে কদম।
লিয়াকত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন যাঁরা
খুঁজছি আমি তাদের আজ হ’য়ে পাগলপারা।
আমিও ছিলাম লিয়াকত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকের পুলা
স্বচক্ষে দ্যাখেছি জ্বলতো না দৈনন্দিন উনুনের চুলা
হাজার টাকা বেতন, ঘরে নিয়ে যেতো করে যতন।
ছিলেম আমি অতি হাবাগোবা,ক্ষীণবুদ্ধি,নির্বোধ
আজ-ও আছি আগের মতোই, হয়নি এখনো বোধ।
কতো টাকা বেতন দিয়েছে বুভুক্ষু পেট ভরতে
দুপুরে সিঙ্গারা খেয়ে রয়েছেন শিক্ষা বিলাতে।
বেতনের অনুপাতে যদি বিলাতো শিক্ষা
ত্রি-পথের মোড়ে বসে সকলকে করতে হতো আজ ভিক্ষা।
“সকলে মোরা সকলের তরে “এই বাক্যটি হৃদয়ে ধরে
এসো হাতটি বাড়াই, শিক্ষাগুরুকে সুস্থতার শরাব পিলায়।
দুই শিক্ষাগুরু নিয়েছেন চির-প্রস্থান –
আসবে না আর কভু ফিরে
তাদের স্মৃতি সন্তানের মাঝে বসত করে ঘুরেফিরে।
খ্যাতির আসন থেকে নেমে এসো শিক্ষাগুরুর সন্তানেরা
সেই হাতটি একবার দাও বাড়িয়ে —
সন্তানের মতো যে হাতটি ধরেছিলো অতি আদরে।
২৫/০৭/২০২২ সৌদি আরব