মধু
খালি গা, কোমরে একটুকরো কাপড় জড়ানো।
কুচকুচে কালো তার শরীর,
কোঁকড়ানো চুলে, তেল না পড়া,
পাথরের বুকে, শিল্পীর তৈরী করা মুখ।
মৌয়াল, সে যে,
বনের মধ্যে, হিংস্র মৌমাছির চাক ভেঙে,
শরীরে, হুলের জ্বালা নিয়ে,
বন থেকে, নিয়ে আসে টাটকা মধু, খাদ নেই এতে।
আজ এসেছে, সে শহরের বুকে,
অনেক ব্যস্ত মানুষের ভিড়ে,
কলসী ভরা মধুর সঞ্চয় নিয়ে,
বড় রাস্তার মাঝে, সকলের মধ্যমণি হয়ে।
সাথে তার, এত মধু! ভরপুর রস!
তবু তার মুখে হাসি নেই কেন?
উদোম শরীরে, যেন একা, কোন কিছুতেই নেই মন।
শুধু খদ্দেরের কাছে, মধুর বিনিময়ে, বিক্রয়।
সামান্য কয়েকটা টাকা পেয়েও’কি,
তার মুখে হাসি আসবে না?
শরীরের পেশীতে, খেলবে না, খুশীর হিল্লোল?
তাও’তো একটুকরো হাসির মুখ খুলল না।
হতে পারে, তার আসল মধু,
ভেজাল মেশানো শহরে, বেচবার সায় নেই।
প্রকৃতির থেকে, চুরি করে আনা রস,
সঠিক মূল্যের অভাবে, লেনদেনে মন নেই।
হতে পারে, জীবনের সব রস দিয়ে গড়া,
তার মধুমাখা মন, বিক্রী হয়ে গেছে।
দারিদ্র আর অভাবের কাছে।
দৈনন্দিন, যণ্ত্রনার হুলের জ্বালায়, শরীর সয়েছে।
হতে পারে, বাড়িতে তার স্বজনেরা,
পথ চেয়ে বসে আছে, তার ফেরার আশায়,
সে, একফোঁটা মধু, তাদের মুখে তুলে না দিয়ে,
একমুঠো টাকা নিয়ে ফিরতে পারবে কিনা, সেই ভরসায়।