খালি বাসনে ভোজন
মনে আছে তোমাদের?
এইতো কয়েক বছর আগের কথা
যখন টুকটাক কবিতা লিখতে শুরু করেছিলাম
সৌন্দর্যের প্রশংসায় একটি কবিতা লিখেছিলাম।
মনে আছে কবি নজরুলের কবিতার পঙক্তি
“তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি তা কি মোর অপরাধ”
আমিও পলকহীন দৃষ্টিতে চেয়ে থাকতাম –
সে যখন ঘন কালো খোলা চুলে স্কুলে যেতো –
পড়ন্ত বিকেলে ক্ষুধার্ত পেটে মলিন মুখে নীড়ে ফিরতো
অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দ্যাখতাম তাঁকে
রক্তলাল ঠোঁট থেকে মাদকীয় নেশা আসতো ঝাঁকে।
পথ হাঁটতো মাধবী লতার মতো দোলে
সর্ব কিছু যেতাম আমি ভুলে –
বখাটে ছেলেদের মতো রাস্তার পাশে দাড়িয়ে –
ঘড়ির কাঁটা বারবার দিতাম হাতে নাড়িয়ে।
রূপসীর রূপের মুগ্ধতায় লিখেছিলাম কিছু কথা
পুরো গাঁও সেইদিন জোট বেঁধে হ’য়ে ছিলো একতা
দিয়ে ছিলো ভোট, গায়ে লেপ্টে দিয়ে ছিলো ইভটিজিং
আশেপাশের গাঁও নিয়ে বসাতে চেয়েছিলো মিটিং।
সমুদ্র কখনো ব’লে নি, ভাসিয়ে দেবো পুরো বিশ্ব
আকাশ কখনো ব’লে নি, ভেঙে পড়বো তোদের মাথার ‘পর
অ-নামিকা তো কখনো ব’লে নি, ড্যাব-ড্যাব করে ক্যানো চেয়ে থাকো
বনলতা সেন তো কখনো ব’লে নি, দুদণ্ড সুখের কথা কবিতায় ক্যানো লিখেছো।
আমি যখন সৌন্দর্যের পূজা করেছিলাম –
সুশীলদের হজম হয়নি, জ্বলে,ফুঁসে উঠেছিলো সাজিয়ে ছিলো সমর, ভাঙতে মোর কোমর।
আজ আমি ডাকছি তোমাদের –
এসো, মিটিং করো আমার কবিতার বিরুদ্ধে
রণতরী সাজিয়ে যুদ্ধের ধামাকা বাজিয়ে এসো।
অভিযোগ আনো আমার বিরুদ্ধে অশ্লীলতার,
সমাজ দ্রোহী কিংবা জঘন্যতম অপরাধের।
আমি তোমার টানাটানা চোখ, কুঁচকানো ভ্রু –
সুডৌল বুক, বেদানার মতো গাল আর চাঁদের ফালির মতো ঠোঁটের প্রেমে পড়েছিলাম।
মনে আছে তোমাদের?
কবিতার জন্য গাঁও ছেড়ে ছিলাম –
বেত্রাঘাত খেয়েছিলাম শিক্ষকের
আজ আমার কবিতা-ই স্বপ্ন,ধ্যান,কল্পনা,আল্পনা
কবিতা-ই নগ্ন দেহে শ্লীলতার ভূষণ –
খালি বাসনে ভোজন।
১৭/০৭/২০২২ সৌদি আরব