পরীর নৌকো
বৃষ্টি শেষে, জলের দেশে,
একটা নৌকা চললো ভেসে,
বৃষ্টি শেষে, আকাশ ঘেঁষে
খুশ খুশালি, দেখতে পেলি ?
তুই কি খুকু দৌড়ে এসে,
ছোট্ট নৌকা তাই ভাসালি !
নৌকা নাকি পানকৌড়ি,
দেখছে যত বাচ্চা ধাড়ি
জলের নীচে খুঁজছে মিছে
মুখ নামিয়ে গুগলি গেঁড়ি,
ঢেউয়ের সাথে কোমর দোলায়,
আকাশ রঙের আকাশ বাড়ি !
নৌকা নাকি পানকৌড়ি ?
ব্যাঙ ব্যাঙ্গাচি, সাপের হাঁচি
বলছে বৃষ্টি থামলে বাঁচি
ছলাৎ ছলাৎ মিষ্টি সুরে,
জলের অনাছিষ্টি হাসে
নৌকো বাড়ি খেলছে সুখে
জলের সাথে জলকুমারী !
মওকা দেখে নৌকা দোলে,
একটু ঢেউয়ে, একটু জলে,
আকাশ কুসুম স্বপ্ন নিয়ে
জলের উপর পিঠ ঠেকিয়ে,
মুখ বাঁকিয়ে হাসছে দূরে,
এক খানা চিল, মস্ত ফাজিল,
শূন্যে ওঠে জোকার দিয়ে,
বোকার মতো খিলখিলিয়ে,
হাসছে আকাশ, হাসছে আলো
হাসলে আলো, বুক জুড়োলো,
বুক জুড়োলে বেশ তো ভালোই !
বুক চিতিয়ে, জল ছিটিয়ে,
মেঘগুলো সব লাইন দিয়ে,
যাচ্ছে সরে, দূর কিনারে,
যেন রে সব গরুর গাড়ি
গরুর গাড়ি, অলস ভারী,
মেঘবাবুদের কি লস্করি !
মস্ত সোনার বস্তা ভরে,
সোনার আলোর রাস্তা ধরে,
যাচ্ছে সরে, যাচ্ছে দূরে,
দিনের পারে, দূর কিনারে,
রাস্তা যেন মিশছে গিয়ে,
দূর আকাশের শেষ মিনারে,
বস্তা বস্তা সস্তা সোনা
ঢালছে মস্ত আকাশপারে !
হাওয়ার তালে নৌকা দোলে,
দুলকি চালে হালকা চালে,
ছৈ ছপা ছপ বৃষ্টি জলে ,
গলির মাথায় শ্যাওড়া ডালে,
ঝুপসি বুড়ি, এ ফাঁকতালে
হাওয়ার তালে, মুখ বাড়ালে,
নাচের তালে,খুব মাতালে,
খুব মাতালে, মন মাতালে
মিষ্টি ভারী ছোট্টপরী
বৃষ্টি দেখেই কি বলিহারি
দিদির খাতার পাতা ছিঁড়ে,
ভাসিয়ে দিল ছোট্ট তরী !
গলির জলে ভাসিয়ে দিয়ে,
দেখছে পরী পা ডুবিয়ে,
চললো ভেসে ছোট্টপরীর
ভেজা রোদের সোনার তরী!
বৃষ্টি কেন হঠাৎ আবার !
নদী আকাশ সব একাকার,
ঝাপসা আকাশ সোনার পুকুর
ভাসলো সাধের নৌকা খুকুর
দৌড়ে আসে দোরের পাশে
কান ফটাফট হেংলি কুকুর
ভাবছে পরী ভাবনা ভারী
আবার বৃষ্টি কি দরকারি
ভগবানের কি পাকামি !
গলি নদী আকাশ সবই
মিশলো আবার, সব একাকার
একটা যেন ঝাপসা ছবি !
দেখ কেন মা আকাশ খোকার,
কি দুষ্টুমি কি দুষ্টুমি।