মা কালী ও কালী মা

প্রিয়জনের সঙ্গে শেয়ার করুন :--👍

Loading

মা কালী ও কালী মা
কলমে- সুব্রত পন্ডিত
সংকলন- এলোকেশী

মাগো তোর চরনের এসেছি- আমার পূজা নেওয়ার আগে আমার কিছু কথা শোন।
তুই নাকি অন্তর্যামী- অব্যক্ত, আদ্যা, নিত্যা, অদ্বয়। মুক্তি পেতে নিকৃষ্ট পাপীও নেয় তোর শরণ।

মা তুই সবের উৎস আবার তুই নাকি সমাপ্তি, তুই রক্তচুষি তুই আবার কল্যাণময়ী মা।
তুই নিলাম্বরী তুই পার্বতী তুই চামুন্ডা তুই-ই শক্তির চূড়ান্ত প্রকাশ, না না আসলে তুই রমা।

তোর রূপের মোহে পড়ে তোর ছলা কলায় ফেঁসেছিলো কৃষ্ণানন্দ, রামকৃষ্ণ আর খ্যাপা বামা।
তুই বলি দিস বলিও নিস তবুও তোর এতো ভক্ত, ব্যাপারটা আমার কাছে অস্পষ্ট খুবই শক্ত।
রক্তাক্ত আমার মন রক্তাক্ত আমার হৃদয়, শত যন্ত্রণার আঘাতেও আমাকে হতে হচ্ছে শক্তপোক্ত।

যাকগে, তোর অনেক কথা শুনেছি অনেক কথা জানিনা আবার কিছু কথা মানিও না।
ঘটনাটা হলো- তুই মা কালী আমি কালী মা, তোর এতো গুনের কীর্তন, আমার উত্থানে শুধুই না আর না। কেউ খোঁজ রাখে না।

আমার গায়ের রং কালো বলে জন্মের পরে সমাজ তাচ্ছিল্যে, আদরে নাম রেখেছে কালী।
আমি কালো বলে মায়ের গুমড়ানো কান্না, স্কুলের বন্ধু বান্ধবীদের মা কালী বলে খ্যাপানো- কি করে ভুলি।

আমিও যে আর পাঁচ জনের মতো মানুষ, মেধাবী সব রকম গুণ আমার মধ্যে আছে কারে বলি।
উপরে ভাব- কাজের সময় কাজের তরে আরো বেশি ভাব, সব বুঝতে পারি- তবু রং খেলি।

ঐতো সেদিন সেজেগুজে প্রশংসা পেলাম- গান জানি পড়ায় ভালো সংসারের সব কাজ জানি।
শিক্ষিত বাবুরা পাত চেঁটে বলে গেল- কি সুন্দর গড়ন প্রতিমার মতো মুখ, মতামতটার- পরে হবে শুনানি।
আর খবর দিলোনা, কালো মেয়েকে কে বিয়ে করবে- হলো কানাকানি আমার রং নিয়েই টানাটানি।

কথাটার মধ্যে নেই জোড়া তালি। এই কালির কি দোষ আজ বলে দে মা।
সময়, পরিবর্তন, সৃষ্টি, ধ্বংস ও শক্তির দেবী হয়ে আমার পাশে থাকিস-মা।

জন্ম দিয়েছিস সুস্থ রেখেছি, নিশ্চয়ই আমিও হবো জননী, দেখিস মা। দুজনে হাসবো চোখের জল মুছ মা।
সব লড়াইয়ে নিজের পায়ে যেন দাঁড়াতে পারি, সেই জন্য নিয়ে এসেছি ডালি। শুধু শক্তি দে মা, শুধু শক্তি দে মা।।

0

Publication author

0
গ্রাম- ধলহরা, ডাকঘর- নেকুড়সেনী, থানা- দাঁতন, জেলা- পশ্চিম মেদিনীপুর, পিন- ৭২১৪৫১
Comments: 0Publics: 37Registration: 24-10-2025
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

পরিচিতি বাড়াতে একে অপরের লেখায় মন্তব্য করুন। আলাপের মাধ্যমে কবিরা সরাসরি নিজেদের মধ্যে কথা বলুন। জমিয়ে তুলুন কবিতার আড্ডা।