ছেলের কর্মভার
(একজন বাবার মতবাদ🎯)
ছেলের কর্মভার
নুর আজাদ নীল
দেখো সর্বত্রই কর্মকর মানুষ নানান কর্মে লিপ্ত,
ব্যথার দানে দৃঢ় – জীবন অশ্রু ঘর্মে হয় দিপ্ত।
কর্ম পথে লাজে পুড়ে কর্তা সে হয় করমী,
কর্মোৎকর্ষ নিচুর চেয়ে নিচু যদি সে হয় মরমী।
অভিন্ন লোকের ভিন্ন জীবন বেদনাক্লান্ত করেছে শুধু কর্ম,
রৌদ্র ঝড়ে তাড়নায় তনু ভিজে পুড়ে আসে যার শর্ম।
কত কিছু রয় জীবনে কত যে কিছু হয়,
সব নিচু নয় জীবনে করে যে লোকে জয়।
পর্বতশৃঙ্খ পাহাড়সম হয় না কারো কর্মভার,
শ্রমবিমুখ অলসপরায়ণের খোলে না কভু ভাগ্যদ্বার।
জীবনে করিবে যত করাঘাত সন্ধানে নতুন পর্যায়,
তালাবদ্ধ দেখিবে সদা সে তারই প্রতি দরজায়।
খোলা রবে নাহ কখনই কারো ভাগ্যদ্বার,
করিয়া দিবে নাহ কেহ ভরিয়া অন্যের সম্ভার।
উচ্চবংশী পদস্থে তুমি নাহি হলে তোমার জন্ম,
চক্রবতে ফিরছে দেখ বংশানুক্রমে নন্দনে তন্ম
প্রশ্নবদ্ধে ছেলে- দিবে দঁকে ফেলে নিজ বদনসিবে,
আমিও পিতদ্বারে একই বাণ ছুড়ে সুখ দিয়েছি নিভে।
কর্ম দোষে হয় দাসী মিছে পর দোষী,
সুখ পরতে চিরসুখী পরের জন্য তোষী।
পিতৃ দোষে পুত্র ভাসে প্রথা ধরে বিধান,
পুত্র তুমি পিতদ্বারস্থে ঘটাও কেন নিদান।
নন্দনে আপন, স্বজনে বন্ধন— এ ধারক বেশে
সুখি করতে সারাজীবন সুখ যায় তার ভেসে
বুঝবি তখন হবি যখন তুমিও কারো বাবা,
আমার মতন মতবাদে শুরু করবি ভাবা।
ছেলের জন্য রেখে যাওয়া ধন নয়তো কারো দায়,
গড়ো তারে মানুষের তরে আত্মনির্ভরতা যেন পায়।
দৈন্য কেটে জীবন প্রফুল্ল যার সেই তো আসল ঋষি,
প্রচেষ্টা বিহীন প্রতিষ্ঠিত বনেদি হলেও দেউলিয়া রিসি।
সুখি হওয়া যায় না কারো জন্য জমাতে গেলে সুখ,
মলিন – মুখটা দেখো না পিতার সহিছেন কত দুখ।
বুঝিবে তুমিও ছেলের সুখেই বাবার পরম সুখ,
দেখাও তোমার দুখ সুদৃঢ় হয় যেন ছেলের বুক।
কর্মজীবনে কর্মী হওয়ায় দরকার এটা নয় দায়মুক্ত,
সবাই তো সার্থক মানব প্রমাণ দেখাটাই সায়যুক্ত।