পুরুষ মানুষের অভিনয় খুবই ভয়ংকর
মনে আছে তোমার
এইতো সেইদিন বলেছিলে
পুরুষ মানুষের অভিনয় নাকি খুবই ভয়ংকর!
একদম সত্যি কথাটাই বলেছিলে
আসলে পুরুষেরা মানুষের কাতারেই পড়েনা
এরা কখনো নিজেকে নিয়ে ভাবতে শেখেনি
জন্মের পরে এদের কানে মন্ত্র পড়ে শুনিয়ে দেয়া হয়
তুমি পুরুষ, তোমাকে লাগামহীন ঘোড়ার মতো এই সংসারের হাল টানতে হবে
প্রতিটি মানুষের অন্নবস্ত্র, বাসস্থান,শিক্ষা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে
পরিবারের সকলের মুখের হাসি তোমাকেই ধরে রাখতে হবে।
এইগুলো করতে গিয়ে তাকে অভিনয় করতে হয়
খাবার না খেয়েও বলতে হয় এইমাত্র খেয়ে এসেছি
অসুস্থ শরীর নিয়েও হাসি মুখে বলতে হয় বেশ ভালো আছি।
ছেঁড়া কাপড় আর ছেঁড়া চপ্পলে কাটিয়ে দিতে হয় বছরের পর বছর
এই অভিনয় গুলো একজন পুরুষকে কেউ শিখিয়ে দিতে হয়না
বংশপরম্পরায় শিখে যায়
আমি যেমন শিখেছি আমার বাবাকে দেখে
বাবা শিখেছে তার দাদাকে দেখে
দাদা শিখেছে তার বাবাকে দেখে।
পুরুষ মানুষের আবেগ, অনুভূতি নেই
নেই কোন অভিযোগ, এই কারণে
অনেকেই নিতে চায় পুরুষ মানুষের সরলতার সুযোগ।
তোমরা কেবল পুরুষ মানুষের বাহিরটা দেখো
তাদের দানবীয় দেহের ভিতরে যে একটা হৃদয় আছে তা কখনো ছুঁয়ে দেখোনি।
একজন ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব অবহেলা দেখো
গ্রীষ্মের রোদে পুড়ে-পুড়ে ছাঁই হয়ে যাওয়াটা দেখনি!
একজন পুরুষ মানুষের দায়িত্ব অবহেলা তোমাদের চোখে পড়ে
তাদের বিসর্জন গুলো তোমাদের ভাবাই না!
পুরুষ নিজের অজান্তেই কখন যে ভয়ংকর অভিনেতা হয়ে উঠেন
তা নিজেও কল্পনা করতে পারেননা।
যৌবনে লাগামহীন ঘোড়ার মতো ছুটে চলা পুরুষ মানুষটি
একসময় লাঞ্ছিত, অপদস্ত হয় সন্তানের কাছে
সারাজীবনে সঞ্চিত পয়সায় তৈরী –
নিজের ঘর থেকেও হতে হয় একদিন বনবাসী।
তোমাদের যদি কোন চাওয়া-পাওয়া না থাকতো
তাহলে আমাদের অভিনেতা হয়ে ভয়ংকর অভিনয় করা লাগতো না।
সত্যি পুরুষ মানুষের অভিনয় খুবই ভয়ংকর
এঁরা মৃত্যুর যন্ত্রণা বুকে চেপে হাসতে জানে
এঁরা জানে কিভাবে হাসি ফুটাতে হয় প্রিয় মানুষগুলোর মুখে।